স্পেন থেকে বহুদিন ধরে বের হয়ে স্বাধীনতা চায় কাতালুনিয়ান। স্বাধীনতা প্রশ্নে আজ সেখানে গণভোট হচ্ছে। এ গণভোট সামনে রেখে গত পরশু শেষবারের মতো সমাবেশ করেছে লাখ লাখ কাতালান। স্বায়ত্তশাসিত কাতালুনিয়া অঞ্চলের রাজধানী বার্সেলোনায় সমাবেশটি হয়। বিশাল এই জমায়েতের উদ্দেশে কাতালুনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুইগদেমন্ট বলেছেন, ‘সার্বভৌম জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার প্রথম পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কাতালুনিয়া।’ তিনি বলেন, ‘বন্ধুরা! বিজয় সুনিশ্চিত; রবিবার গণভোটের পোশাক পরে আসুন আর ঘর ছাড়ুন ইতিহাস বদলাতে।’
উল্লেখ্য, স্পেনের বিত্তশালী অঞ্চল কাতালুনিয়া। এর রাজধানী বার্সেলোনা। অঞ্চলটির নিজস্ব ভাষা রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম বড় ফুটবল ক্লাব এখানকার এফ সি বার্সেলোনা। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে কাতালুনিয়া প্রাদেশিক পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় সেখানকার স্বাধীনতাকামীরা। নির্বাচনের ওই ফলের মধ্য দিয়ে স্পেন থেকে পৃথক হয়ে নতুন রাষ্ট্র গঠনের পথে এক ধাপ এগিয়ে যায় কাতালানরা। গত জুনে কাতালুনিয়া কর্তৃপক্ষ ১ অক্টোবর গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দেয়। স্পেনের সরকার প্রথম থেকেই এ গণভোটের বিরোধিতা করে আসছে; ভোট ঠেকাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে এসে কাতালুনিয়ায় মোতায়েন করা হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। স্বাধীনতাকামীদের প্রচার ঠেকাতে সপ্তাহজুড়ে কাতালুনিয়ার আকাশে বাণিজ্যিক হালকা বিমানের উড্ডয়ন বন্ধ রেখেছে স্পেন কর্তৃপক্ষ।
সরকারি ভবনগুলো যেন ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে স্পেন সরকার। অন্যদিকে স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলনকারীরা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন বিভিন্ন স্কুলের আশপাশ দখলে রেখেছে। স্কুলগুলোর সামনে শত শত ট্রাক্টর জড় করে সেগুলো ঘিরে রেখেছে তারা। ভোটের জন্য সারা কাতালুনিয়ায় ২ হাজারের বেশি কেন্দ্র খোলার কথা জানিয়েছে আঞ্চলিক সরকার। কয়েক সপ্তাহ ধরে বিপুল পরিমাণ নির্বাচনী সামগ্রী জব্দ করার কথা জানিয়েছে পুলিশ; ভোটের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করারও প্রস্তুতি চলছে। এত কিছুর পরও অনড় কাতালুনিয়ার স্বাধীনতাপন্থিরা। আজকের ভোটের পরই জানা যাবে কী আছে কাতালানদের ভাগ্যে। এএফপি, বিবিসি।