একের পর এক দুঃসংবাদ আসছে মিয়ানমারের তথাকথিত গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির জন্য। এই নেত্রীর আন্তর্জাতিক অনেক সম্মাননা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে বিখ্যাত অক্সফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় তাকে দেওয়া বিশেষ সম্মাননা ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব অক্সফোর্ড’ কেড়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর রেশ কাটতে না কাটতেই সু চিকে দুঃসংবাদ দিচ্ছে সিটি অব লন্ডন। তারা সবেমাত্র গত মে মাসে ‘অনারারি ফ্রিডম’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে। কিন্তু মিয়ানমারের ভিতরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যে নৃশংসতা চালানো হচ্ছে এবং সে বিষয়ে তিনি কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তার সেই পদকও কেড়ে নিতে পারে সিটি অব লন্ডনের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
এ জন্য বিতর্কে অংশ নিতে এর সদস্যদের আহ্বান জানিয়ে ই-মেইল পাঠানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য গার্ডিয়ান। সংবাদ মাধ্যমটির খবরে বলা হয়, সু চিকে সম্মান জানিয়ে ওই পুরস্কার দিয়েছিল সিটি অব লন্ডন। তবে তার দেশের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি সু চি। মূলত এই কারণেই তার সম্মাননাটি প্রত্যাহারের বিষয়ে এর সদস্যদের বিতর্কে ডাকা হয়েছে। সিটি অব লন্ডনের পলিসি ও রিসোর্স কমিটির চেয়ারম্যান এবং আইনজীবী ক্যাথেরিন ম্যাকগিনেস বলেছেন, মিয়ানমারে ভয়াবহ অবস্থা এবং সেনাবাহিনীর চালানো নৃশংসতার বিষয়ে তিনি হতাশ। শুধু তিনি নন, কমিটির অনেক সদস্যই সু চির আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন। দ্য গার্ডিয়ান বলছে, সহকর্মীদের এমন চাপ ও মিয়ানমারের ভিতরে ক্রমাগত নৃশংসতার রিপোর্ট বেরিয়ে আসায় সিটি অব লন্ডন করপোরেশনের নেতারা ওই বিতর্কের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অং সান সু চির স্বামী অরিস একজন বৃটিশ। এ জন্য সু চি যখন মিয়ানমারে গৃহবন্দি অবস্থায় কাটান ১৫ বছর, তখন তার প্রতি বৃটিশদের সহানুভূতি ছিল বেশি। তাই তারা তাকে নানা সম্মাননায় ভূষিত করেছিলেন। সম্প্রতি রোহিঙ্গা সংখ্যাগরিষ্ঠদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার পক্ষ নেওয়ার জন্য সু চি আন্তর্জাতিক তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছেন। এ কারণে তাকে দেওয়া বৃটেনের বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সম্মাননা কেড়ে নেওয়ার তোড়জোড় চলছে।