শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
স্বাধীনতা ইস্যু

মাদ্রিদের নির্দেশ মানবে না কাতালোনিয়া

মাদ্রিদের নির্দেশ মানবে না কাতালোনিয়া

কাতালোনিয়ার ওপর স্পেন সরকারের প্রত্যক্ষ শাসন আরোপের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হলে আঞ্চলিক সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের সব ধরনের নির্দেশ অমান্য করার ঘোষণা দিয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত এ অঞ্চলটির পররাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র রাউল রোমেভা গতকাল এ কথা জানিয়েছেন। মাদ্রিদভিত্তিক কেন্দ্রীয় সরকার কাতালানদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখোই গত শনিবার মন্ত্রিসভার এক জরুরি বৈঠক শেষে জানিয়েছেন যে, কাতালান সরকার স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে না সরায় তারা অঞ্চলটির সরকার বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আইন ও সংবিধানের বাইরে গিয়ে কাজ করায় অঞ্চলটির প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজেমন্তসহ স্বাধীনতাপন্থি শীর্ষ নেতাদের বরখাস্তেরও হুমকি দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে অঞ্চলটির স্বাধীনতা ঠেকাতে সেখানে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি। আগামী শুক্রবার সরকারের গৃহীত এসব উদ্যোগ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাস হওয়ার কথা রয়েছে। এর জবাবে কাতালান সরকারও আগামী বৃহস্পতিবার আঞ্চলিক পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশন ডেকেছেন। আর তখনই কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ তোয়াক্কা করে একতরফাভাবে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও শোনা যাচ্ছে।

গত ১ অক্টোবর স্বাধীনতার প্রশ্নে কাতালোনিয়ায় গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৯০ শতাংশ ভোটার স্বাধীনতার পক্ষে মত দিয়েছেন। আর এ গণভোট ঘিরেই কেন্দ্রীয় সরকার ও আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে বিরোধ চরমে পৌঁছেছে।

এবার ইতালিতে বিচ্ছিন্নতাবাদের গন্ধ : স্বাধীনতার সুবাস পেতে চায় ইউরোপের অনেক অঞ্চল। স্পেনের কাতালান এখন গোটাবিশ্বের আলোচনায়। এরমধ্যে ইউরোপের প্রভাবশালী ইতালির দুটি অঞ্চল গণভোটের আয়োজন করেছে। তবে পুরোপুরি স্বাধীনতা নয়, গণভোটে আরও স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে রায় দিলেন ইতালির উত্তরের দুই রাজ্য লম্বার্ডি ও ভেনেতোর মানুষ। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী এ অঞ্চলে এমন প্রবণতা ইতালিতে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে ওঠছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, লম্বার্ডি রাজ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ ভোটার স্বায়ত্তশাসনের আরও অধিকারের পক্ষে রায় দিয়েছেন। সেখানে ভোটগ্রহণের হার ৪০ শতাংশের সামান্য বেশি। ভেনেতো রাজ্যে প্রায় ৫৮ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সেখানে স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে ৯৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।  দুই রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী ভোটারদের এই স্পষ্ট রায়ের পর প্রধানমন্ত্রী পাওলো জেন্টিলোনির সঙ্গে স্বায়ত্ত- শাসনের বিষয়ে আলোচনার ঘোষণা করেছেন। উল্লেখ্য, স্পেনের কাতালোনিয়া রাজ্যের মতো এ উদ্যোগ একতরফা ছিল না। রোমে ফেডারেল সরকারের সম্মতি নিয়েই এই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। গণভোটের রায় কার্যকর করার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতাও নেই। স্পেনের কাতালুনিয়া রাজ্যের মতো ইতালির উত্তরের দুই রাজ্য অর্থনৈতিক মাপকাঠিতে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই দুই রাজ্য দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতার প্রায় ৩০ শতাংশের ভাগিদার। কর ও রাজস্বের একটা বড় অংশ ফেডারেল সরকারের হাতে তুলে দিতে আর প্রস্তুত নয় দুই রাজ্য সরকার। এই গণভোটের রায় কার্যকর হলে এ ক্ষেত্রে আরও ক্ষমতা পাবে লম্বার্ডি ও ভেনেতো রাজ্য। অন্যদিকে ইতালির অন্য অঞ্চল সেই সমৃদ্ধি থেকে অনেকটা বঞ্চিত হবে। দেশের উত্তরাঞ্চলে ক্ষমতাসীন দক্ষিণপন্থি পপুলিস্ট ‘নর্দার্ন লিগ’ দল বেশ কিছুকাল ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদের উদ্যোগ নিয়ে আসছে। তবে পুরোপুরি স্বাধীনতার দাবি থেকে সরে এসে তারা আপাতত স্বায়ত্তশাসনের অধিকার পেতে উৎসাহী। গণভোটের রায়কে হাতিয়ার করে এই দল ফেডারেল সরকারের সঙ্গে আরও জোরালোভাবে দরকষাকষি করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। বিবিসি, রাশিয়া টুডে।

সর্বশেষ খবর