শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জাতিসংঘে বসেই উ. কোরিয়াকে পুরো ‘ধ্বংস’ করার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

জাতিসংঘে বসেই উ. কোরিয়াকে পুরো ‘ধ্বংস’ করার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

নিকি হ্যালি

উত্তর কোরিয়ার ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদ গতকাল এক জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেন, যুদ্ধ বাধলে উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বকে ‘একদম ধ্বংস’ করে দেওয়া হবে। পিয়ংইয়ংয়ের ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচি মোকাবিলায় সামরিক বিকল্পসহ সম্ভাব্য সব পথ বিবেচনা করা হচ্ছে বলে বার বার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তবে এখনো কূটনৈতিক সমাধানেই তারা বেশি আগ্রহী বলে জানিয়েছেন। হ্যালি বৈঠকে উপস্থিত সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা কখনোই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চাইনি, আজও চাচ্ছি না। যদি যুদ্ধ বাধেই তাহলে তা হবে তাদের ধারাবাহিক আগ্রাসনের কারণে যেমনটি গতকাল দেখলাম আমরা; আর যুদ্ধ বাধলে উত্তর কোরিয়ার শাসনব্যবস্থা একদম ধ্বংস করে দেওয়া হবে, কোনো ভুল করা হবে না।’ তিনি তার ভাষণে, চীনকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, উত্তর কোরিয়ায় তেল সরবরাহ বন্ধ করুন। তবে এ ব্যাপারে চীন কোনো মন্তব্য করেনি। উত্তর কোরিয়ার প্রতিবেশী ও একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার চীন। তেল সরবরাহ বন্ধ হলে তা পিয়ংইয়ংয়ের অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। এদিকে উত্তর কোরিয়ার নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর বুধবারই এ নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে টুইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার উসকানিমূলক পদেক্ষেপ নিয়ে এইমাত্র  চীনা প্রেসিডেন্ট শি-র সঙ্গে কথা হলো। আজই উত্তর কোরিয়ার ওপর আরও বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এই পরিস্থিতি অবশ্যই মোকাবিলা করা হবে।’ ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে ‘সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র’ ঘোষণা করার এক সপ্তাহের মাথায় ওই ভয়ংকর আন্তমহাদেশীয়  ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং। এই ক্ষেপণাস্ত্র ‘পুরো বিশ্বের জন্যই হুমকি’ বলছে ওয়াশিংটন। মার্কিন বিজ্ঞানীদের একটি সংগঠন বলছে, উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো অংশে আঘাত হানতে সক্ষম। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, পিয়ংইয়ং থেকে উেক্ষপণের পর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছায়; তারপর নেমে এসে বুধবার সকালে উত্তর কোরিয়া থেকে ৯৬০ কিলোমিটার দূরে জাপানের জলসীমায় পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি উপরের দিকে নিক্ষেপ না করে সোজাসুজি নিক্ষেপ করলে এটি দিয়ে ১৩,০০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা সম্ভব। যে কোনো ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহারের বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই গত কয়েক বছর ধরে একের পর এক পারমাণবিক অস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে আসছে উত্তর   কোরিয়া। এএফপি, বিবিসি।

সর্বশেষ খবর