শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

এবার ট্রাম্প-তেরেসা বাগ্‌যুদ্ধ

এবার ট্রাম্প-তেরেসা বাগ্‌যুদ্ধ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র-ডানপন্থি ভিডিও (মুসলিম বিদ্বেষী) শেয়ারের সমালোচনা করায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে- কে একহাত নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। মে-কে নিজের চরকায় তেল দেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের ‘সন্ত্রাসবাদের’ ওপর নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প। এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমার দিকে নজর দিবেন না, যুক্তরাজ্যে বিরাজমান ধ্বংসাত্মক মৌলবাদী ইসলামী সন্ত্রাসবাদের দিকে নজর দিন।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্যে চটেছেন ব্রিটিশ এমপিরাও। গতকাল সকালে পার্লামেন্ট অধিবেশনের শুরুতেই ট্রাম্পের অশোভন আচরণের কড়া সমালোচনা করে এর একটি বিহিত দাবি করেছেন দেশটির এমপিরা। যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের যে কোনো সরকারি সফর আটকে দেওয়ার দাবি তুলেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। আর এমপিদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রেসিডেন্টের আচরণের বিষয়ে সতর্ক করে দিতে।ঘটনার সূত্রপাত হয় গত  মঙ্গলবার। যুক্তরাজ্যের কট্টর বর্ণবাদী দল ‘ব্রিটেন ফার্স্ট’ এর ডেপুটি লিডার জেইডা ফ্রান্সেনের ইসলামুবিদ্বেষী উসকানিমূলক দুটি টুইট নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে রিটুইট করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বর্ণবাদী উসকানির অপরাধে জেইডা সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ফলে এমন বর্ণবাদীর মন্তব্য শেয়ার করার কারণে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিক ও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতারা ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছেন। গণমাধ্যমগুলোর প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ট্রাম্প উগ্রবাদী দলের যে মন্তব্য প্রচার করেছেন, সেটি ঘৃনাপূর্ণ, এটি কেবল মিথ্যাচার ও বিদ্বেষকেই উসকে দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য উভয় দেশ একে অপরের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বিদেশি নেতাদের মধ্যে সেই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন এবং হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। টুইটারে ট্রাম্পের চার কোটিরও বেশি অনুসারী আছে। ট্রাম্প যে ভিডিওগুলো শেয়ার করেছেন তার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন রাজনীতিকও। ব্রিটেনে খ্রিস্টীয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মমতের সর্বোচ্চ যাজক ক্যান্টাবুরির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি বলেছেন, ‘ট্রাম্প উগ্র-ডানপন্থিদের কণ্ঠ জোরালো করার পথে গেছেন, যা অত্যন্ত বিরক্তিকর।’ এদিকে টুইটারে মে-কে দেওয়া জবাব প্রথমে ভুল টুইটার অ্যাকাউন্টে ট্যাগ করেছিলেন ট্রাম্প। তার বিবৃতি এমন একজনের কাছে চলে গিয়েছিল যার অনুসারী মাত্র ছয়জন। এরপর ওই টুইট ডিলিট করে সেটি আবার পোস্ট করেন ট্রাম্প, এবার বার্তাটি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দাফতরিক অ্যাকাউন্টে ট্যাগ হয়। প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে জর্ডান সফরে রয়েছেন। সংসদে সরকারের পক্ষে প্রশ্নের জবাব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড। তিনি বলেন, ট্রাম্পের উচিত টুইটার ব্যবহার বাদ দেওয়া। ট্রাম্পের এমন লাগামহীন আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিশেষ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলেও সতর্ক করেন তিনি। বিবিসি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর