শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
কাতালোনিয়ায় ভোট

স্বাধীনতাকামীদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা

স্বাধীনতাকামীদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা

কার্লেস পুজেমন

স্পেন থেকে আলাদা হয়ে কাতালোনিয়া স্বাধীনতাকামীদের একটি জোট কাতালোনিয়ার প্রাদেশিক সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রাদেশিক প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজেমনের ‘কাতালোনিয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ’ দল বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে ৩৪টি আসন লাভ করে। অপর দুটি স্বাধীনতাপন্থি দল একত্রে ৩৬টি আসন সংগ্রহ করেছে। কাজেই ১৩৫ আসন বিশিষ্ট প্রাদেশিক সংসদে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকছে। ফলে পুজদেমন দৃশ্যত ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন। ২০১৫ সালের শেষ প্রাদেশিক নির্বাচনেও পুজেমনের জোট জিতেছিল। তবে সেবার আসন বেশি পেয়েছিল। এবারের নির্বাচনে স্বাধীনতাকামী দলগুলো মোট ভোটের ৪৮ শতাংশ লাভ করেছে। মাদ্রিদপন্থি নাগরিক দল তাদের ৩৭টি আসনের অধিকাংশ সরাসরি ভোটে জয় করে। ফলে কার্যত সরকার গঠন করতে যাচ্ছে পুজেমনের দল। ব্রাসেলসে স্বেচ্ছানির্বাসন থেকে পুজদেমন এ জয়কে ‘কাতালান প্রজাতন্ত্রের’ পক্ষে একটি জয় ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখয়ের পক্ষে একটি ‘চপেটাঘাত’ বলে অভিহিত করেছেন। ‘আমাদের কথা যাতে শোনা হয়, আমরা সে অধিকার অর্জন করেছি বলে আমার ধারণা। মন্তব্য করেন পুজদেমন। কাতালান জাতীয় সম্মেলনের ভাইস প্রেসিডেন্ট আগুস্তি আলকোবেরো কারারুদ্ধ স্বাধীনতাকামীদের মুক্তি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বরখাস্তকৃত ‘সরকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ দাবি করেন। কাতালোনিয়া ইতিমধ্যেই বহুলাংশে স্বশাসিত। তা সত্ত্বেও এই প্রাদেশিক নির্বাচনকে কাতালোনিয়ার স্পেন থেকে স্বাধীন হওয়ার প্রচেষ্টার সনদ বা তার বিপরীত বলে গণ্য করা হচ্ছিল। ভোটের আগে বিভিন্ন জরিপ থেকে দেখা যাচ্ছিল, স্বাধীনতাপন্থি তরফে ইআরসি দল ও স্পেনের সঙ্গে ইউনিয়নের পক্ষপাতী নাগরিক দল, এ দুটি দলের মধ্যে কোনো একটি সর্বাধিক আসন সংগ্রহ করবে। স্বাধীনতাপন্থি শক্তিদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়াটা স্পেনের প্রধানমন্ত্রী রাখয়ের সরকারের পক্ষে একটি লক্ষণীয় পরাজয়, কেননা রাখয় এ নির্বাচনের মাধ্যমে কাতালোনিয়ায় স্বাধীনতাপন্থিরা পরাজিত হবে বলে ধারণা করেছিলেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ভোটের ফলাফল থেকে কাতালোনিয়ায় রাজনৈতিক অচলাবস্থা আরও বাড়বে। কেননা কাতালানদের স্বাধীনতাপন্থিরাই জিতেছে। তারা প্রাদেশিক সরকারের দায়িত্ব নিতে চলেছে।

গত বছরের ১ অক্টোবর কাতালোনিয়ায় স্বাধীনতা সংক্রান্ত একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। সেই গণভোটের পর কাতালোনিয়া একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে পুজেমন। যদিও আদালতের তরফ থেকে গণভোট ও সেই গণভোট পরবর্তী স্বাধীনতা ঘোষণা, উভয় পদক্ষেপকেই অসাংবিধানিক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপর মাদ্রিদের কেন্দ্রীয় সরকার পুজেমনের সরকারকে বরখাস্ত করে কাতালোনিয়ায় কেন্দ্রের শাসন চালু করেন। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, স্বাধীনতার গণভোট নিয়ে সৃষ্ট টানাপোড়েনের পর আঞ্চলিক নির্বাচনে স্বাধীনতাপন্থিদের বিপুল বিজয় স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকারকে ভাবিয়ে তুলবে। এএফপি, ডয়েচে ভেলে

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর