রবিবার, ২২ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শীতল যুদ্ধ চালাচ্ছে চীন : সিআইএ

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শীতল যুদ্ধ চালাচ্ছে চীন : সিআইএ

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের উপপ্রধান মাইকেল কোহেন দাবি করেছেন, আমেরিকার  বিরুদ্ধে চীন শীতল যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার আসপেন সিকিউরিটি ফোরামে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেছেন।

কোহেন জানিয়েছেন, চীন বিশ্বব্যাপী নিজের প্রভাব বিস্তারের যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার উদ্দেশ্য হচ্ছে সুপারপাওয়ার হিসেবে নেতৃত্বদানকারী যুক্তরাষ্ট্রের জায়গায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও তার সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শীতল যুদ্ধ শুরু করেছেন দাবি করে  কোহেন বলেন, ‘তাদের নিজেদের শর্ত মোতাবেক এবং শি যা প্রকাশ করেছেন সেই মোতাবেক আমি বলতে চাই তারা আমাদের বিরুদ্ধে যা ঘোষণা করেছে তা হচ্ছে মৌলিকভাবে শীতল যুদ্ধ, শীতল যুদ্ধের সময় আমরা যেমনটা দেখেছিলাম  তেমন শীতল যুদ্ধ নয়। তবে এটি সংজ্ঞাগতভাবে শীতল যুদ্ধ’।

শীতল যুদ্ধের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে কোহেন বলেন, ‘আপনার পতন ঘটানোর জন্য একটি দেশ সংঘাত ব্যতীত তার সরকারি ও বেসরকারি, অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে বৈধ ও অবৈধ ক্ষমতার সব ক্ষেত্র ব্যবহার করে আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। চীন সংঘাত চায় না।’ তিনি বলেন, ‘দিনের শেষে তারা নীতি নির্ধারণে স্বার্থ বিবেচনায় বিশ্বের প্রত্যেকটি  দেশকে প্রথম ও সর্বাগ্রে চীনের পাশে চায়, যুক্তরাষ্ট্রকে নয়। কারণ চীনারা ক্রমবর্ধমানভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের সীমা নির্ধারণ করছে এবং আমরা প্রক্রিয়াগত সংঘাতের পাশে দাঁড়িয়ে আছি।’

ট্রাম্প ‘কর’ যুদ্ধে প্রস্তুত : চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক ‘কর’ যুদ্ধের জন্য নিজেকে প্রস্তুত বলে ঘাষণা দিয়েছেন মার্কিন  প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া চীনের বিভিন্ন পণ্যের ওপর নতুন করে কর আরোপের চিন্তা করছেন ট্রাম্প। অঙ্কের হিসেবে এই করের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সিএনবিএস টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমি ৫০০ বিলিয়নের যুদ্ধে যেতে প্রস্তুত। আর আমি এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করছি না। আমি দেশের সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য এমনটা করতে যাচ্ছি।  প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন এক সময়ে এই কর আরোপের পক্ষে নিজের শক্ত অবস্থান আবারও তুলে ধরলেন যখন আগামী সপ্তাহ  থেকেই আগের আরোপ করা কর কার্যকর হতে যাচ্ছে।

চীনের বিভিন্ন পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ হারে ইতিমধ্যে কর বাড়িয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এতে চীনকে অতিরিক্ত ২০০ বিলিয়ন আমদানি শুল্ক দিতে হবে মার্কিন মুল্লুককে। তবে নতুন কর আরোপের বিষয়টি নিয়ে এখনো ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলে জানান ট্রাম্প। আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন মুদ্রা ডলারের দরপতন এবং স্থানীয় বাজারে ডলারের বিপরীতে সুদের হার বেড়ে যাওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং চীনকে বরাবরই দোষারোপ করে আসছে ট্রাম্প প্রশাসন। চীন থেকে পণ্য আমদানিতে কর আরোপের পাশাপাশি চীনের একচ্ছত্র বাজার নীতিরও সমালোচনা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনের বাজারনীতিকে ‘আগ্রাসী’ বলেও সম্বোধন করেন তিনি।

চীন যদি এমন বাজারনীতি থেকে সরে না আসে তাহলে চীনের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি   দেন ট্রাম্প। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতেই এক ধরনের ‘বাণিজ্যিক যুদ্ধে’ লিপ্ত আছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। নিজ দেশে একে অন্যের আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে আসছে দেশ দুটি। সর্বশেষ চীনের ওপর ২০০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ কর আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর জবাবে চীনে আমদানি হওয়া মার্কিন পণ্যের ওপর ৫০ বিলিয়ন ডলারের কর আরোপ করে চীন। সিএনএন।

সর্বশেষ খবর