ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে চলতি বছরই পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর এই আভাস দিয়েছে ব্রিটেনের ‘সান’ পত্রিকা। এদিকে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত অচলাবস্থা কাটাতে ইইউ ব্রিটেনকেই স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার ডাক দিচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্রেক্সিট সংক্রান্ত মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে ব্রিটেন ও ইইউর মধ্যে কোনো চুক্তি করে আলাদা হতে হবে। আর এ জন্য সময় খুবই কম। তিনি আরও বলেছেন, এই অবস্থায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে বিরোধী নেতা জেরেমি কর্বিনের পরামর্শ অনুযায়ী স্থায়ী শুল্ক ইউনিয়ন মেনে নিলে বর্তমান অরাজকতার অবসান হতে পারে। মোটকথা, ব্রিটেনকেই পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে বলে মনে করিয়ে দেন তিনি। বার্নিয়ে বলেন, ‘আমরা কখনো ব্রেক্সিট চাইনি, ব্রেক্সিটের দাবি তুলিনি। দায়িত্ব লন্ডনে শুরু হয়েছিল, এখনো তা লন্ডনেই রয়েছে।’
বার্নিয়ের সঙ্গে আলোচনার পর লুক্সেমবুর্গের প্রধানমন্ত্রী সাভিয়ে বেটেল ব্রিটেনকে ‘বিভক্ত যুক্তরাজ্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার মতে, দেশটিকে এই মুহূর্তে ‘সংযুক্ত যুক্তরাজ্য’ হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়।
এদিকে ব্রিটেনের ‘সান’ সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে চলতি বছর গ্রীষ্মকালে পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিজের উল্টরসূরি স্থির করতেই প্রধানমন্ত্রী এ সময় বেছে নিচ্ছেন বলে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য মনে করেন। ব্রেক্সিট সম্পর্কে চরম অনিশ্চয়তার ফলে ব্রিটেনের অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সোমবার প্রকাশিত তথ্য-পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ১.৪ শতাংশ। ২০১২ সালে ইউরোপে আর্থিক সংকটের পর ব্রিটেন এমন দুর্দিনের মুখ দেখেনি। বিনিয়োগের হারও ছিল অত্যন্ত কম। গত ডিসেম্বর মাসে প্রবৃদ্ধির বদলে মন্দা দেখা গেছে। ব্রেক্সিটের দিন ঘনিয়ে আসা সত্ত্বেও ব্রিটেনের শিল্প-বাণিজ্য জগৎ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অন্ধকারে রয়েছে। ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। এসবের মধ্যে ব্রিটেন সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে এক মুক্তবাণিজ্য চুক্তিস্বাক্ষর করেছে। ফলে ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্পর্কে অনিশ্চয়তা থাকবে না।এদিকে সোমবার রাতে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে ব্রাসেলসে ব্রিটেনের ব্রেক্সিট মন্ত্রী স্টিফেন বার্কলের সঙ্গেও আলোচনা করেন। ‘গঠনমূলক’ আলোচনা সত্ত্বেও বার্নিয়ে আবার স্পষ্ট করে দেন, মূল ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে নতুন করে কোনো আলোচনা সম্ভব নয়। তবে আগামী দিনগুলোতেও দুই পক্ষের মধ্যে সংলাপ চালু থাকবে। ব্রিটেনের সরকার সে দেশে বিতর্কিত ‘ব্যাকস্টপ’ ব্যবস্থার কোনো স্পষ্ট বিকল্প পেশ না করায় অগ্রগতির কোনো সম্ভাবনা অবশ্য কম। ডয়েচে ভেলে