ইরান আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ইরান তার স্পর্শকাতর পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করে আনবে এবং দেশটির ওপর আরোপ করা অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়ার বিনিময়ে ইরান আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের ঢুকতে দেবে।
সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কী?
দুনিয়াজুড়ে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বা ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ানো হয় শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে, যেমন চিকিৎসা কাজে বা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু এটি যদি অত্যধিক পরিশোধিত হয়, তাহলে সেই ইউরেনিয়াম দিয়ে পারমাণবিক বোমা বানানো যায়। পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী, ২০৩১ সাল পর্যন্ত ইরানকে কেবলমাত্র কম সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যার মাত্রা হবে তিন থেকে চার শতাংশ। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য যে ইউরেনিয়াম লাগে, তার মাত্রা ৯০ শতাংশ বা তার বেশি।এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ৩০০ কেজির বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রাখতে পারবে না। এছাড়া ইরান ১৩০ টনের বেশি ভারী পানি, যার মধ্যে সাধারণ পানির চেয়ে বেশি হাইড্রোজেন থাকে, সংরক্ষণ করতে পারবে না। সেই সঙ্গে দেশটির আরাকে অবস্থিত বিশেষায়িত পানির মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নকশা নতুন করে করতে হবে। বিশেষায়িত পানির রিঅ্যাক্টরে প্লাটোনিয়াম থাকে, যা পারমাণবিক বোমার ব্যবহার করা যায়।
ইরান কেন নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে?
২০১৮ সালের মে মাসে পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়, এবং নতুন করে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ট্রাম্পের ভাষ্যমতে চুক্তিতে অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে। তিনি চাইছিলেন ইরানের সরকারকে নতুন করে চুক্তি করতে বাধ্য করতে। কিন্তু ইরান তাতে রাজি হয়নি। আর যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে ইরানের অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়ে। মূলত ট্রাম্প প্রশাসনকে তোয়াক্কা করতেই ইরান ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে।