পারস্য উপসাগরে কয়েকটি ইরানি নৌকা একটি ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাংকার আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু যুক্তরাজ্যের রয়্যাল নেভির জাহাজের তাড়া খেয়ে পিছু হটেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্য।
সম্প্রতি পারস্য উপসাগরে একাধিক তেলের ট্যাংকারে অগ্নিকান্ড, আটক ও তাড়া করার ঘটনা নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করল। অন্যদিকে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন তলানিতে ঠেকেছে।
ব্রিটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র জানান, এইচএমএস মন্ট্রোস নামের জাহাজটি তিনটি ইরানি নৌকা ও তেলের ট্যাংকার ব্রিটিশ হ্যারিটেজ নামে জাহাজের মধ্যে অবস্থান নেয়। হরমুজ প্রণালির উত্তর দিকের প্রবেশমুখে ইরানের নৌকাগুলো তেলবাহী জাহাজ ব্রিটিশ হ্যারিটেজকে থামতে বলে, কিন্তু একটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ তাদের সতর্ক করলে তারা সরে পড়ে। এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সেখানে থাকা রাজকীয় নৌবাহিনীর এইচএমএস মন্ট্রোস (যুদ্ধজাহাজ) তাদের বন্দুকগুলো ওই বোটগুলোর দিকে তাক করে রেডিও মারফত তাদের সতর্ক করে, এরপর তারা সেখান থেকে চলে যায়।’ ইরানের এ ধরনের কার্যক্রম ‘আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী’ বলে মন্তব্য করেন ব্রিটিশ মুখপাত্র। তবে ইরান তেলের ট্যাংকার আটক করার প্রচেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।তাদের একটি ট্যাংকার আটক করার ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়ার বিষয়ে আগে থেকেই হুমকি দিয়ে আসছে ইরান। গত সপ্তাহে ব্রিটিশ রয়্যাল মেরিন জিব্রাল্টার কর্তৃপক্ষকে একটি ইরানি তেলের ট্যাংকার আটক করতে সহায়তা করে। কারণ তাদের কাছে প্রমাণ ছিল সেটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে সিরিয়ার দিকে যাচ্ছিল। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় একজন ইরানি কর্মকর্তা বলেছিলেন, ওই ইরানি জাহাজ না ছাড়লে প্রতিশোধ হিসেবে একটি ব্রিটিশ জাহাজ আটক করা উচিত।
এ বিষয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য তেহরানে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকেও ডেকে পাঠায় ইরান। তারা বলেছে, এটি ‘এক ধরনের দস্যুবৃত্তি’। সাম্প্রতিক এ দ্বন্দ্ব এমন একটি সময়ে দেখা দিল যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ইরানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সম্পর্কও খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। জুনে দুটি তেলের ট্যাংকারে হামলার ঘটনায় ‘প্রায় নিশ্চিতভাবে’ ইরান জড়িত বলে মন্তব্য করার পর দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটেছে। যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘তেলের ট্যাংকার আটকানোর চেষ্টার এ কার্যক্রম আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। আমরা এ বিষয়ে চিন্তিত এবং ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি।’ সর্বশেষ হরমুজ প্রণালি ও ইয়েমেন উপকূলের বাব আল মানদাব প্রণালিতে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলোর জাহাজকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সামরিক জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে ওয়াশিংটন।