শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের আগে আসামে উৎকণ্ঠা, নিরাপত্তা

নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের আগে আসামে উৎকণ্ঠা, নিরাপত্তা

যুগের পর যুগ তারা বসবাস করছেন আসামে। কিন্তু এর মধ্যে ৪১ লাখ আসামবাসীর রক্তে বয়ে যাচ্ছে আতঙ্কের শীতল স্রোত। আতঙ্ক রাজ্যহীন, দেশহীন হয়ে যাওয়ার, আতঙ্ক পাকাপাকিভাবে ‘বিদেশি’ বা ‘উদ্বাস্তু’ অথবা ‘অনুপ্রবেশকারী’ ছাপ পড়ার। স্থানীয় সময় আজ সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা) প্রকাশ হওয়ার কথা আসাম জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা। সকাল ১০টায় এনআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ হবে সেই তালিকা। তবে যাদের ইন্টারনেট কানেকশন নেই, তারা এনআরসি সেবা কেন্দ্রে গিয়েও তালিকায় নিজের নাম উঠেছে কিনা, তা দেখতে পারবেন। তবে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের এক দিন আগে ভারতের আসাম রাজ্যে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে হাজার হাজার আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য ও পুলিশ। গতকাল এনডিটিভি জানায়, স্থানীয় সময় শনিবার (আজ) সকাল ১০টায় অনলাইনে নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ করা হবে। এজন্য রাজ্যজুড়ে ‘সেবা কেন্দ্র’ স্থাপন করা হয়েছে। যাদের ইন্টারনেট নেই তারা ওইসব কেন্দ্রে গিয়ে তালিকা দেখতে পারবেন। তালিকা থেকে ৪১ লাখের বেশি আবেদনকারীর নাম বাদ পড়তে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করছে ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। তবে যাদের নাম বাদ পড়বে তারা এখনই বিদেশি গণ্য হবেন না বলে এনডিটিভিকে জানান রাজ্যের গৃহমন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। বরং তারা আপিল করার জন্য ৬০ থেকে ১২০ দিন সময় পাবেন। গৃহমন্ত্রণালয় জানায়, আপিল আবেদনের শুনানির জন্য রাজ্যে অন্তত ১ হাজার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। এরই মধ্যে ১০০ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ ওই সংখ্যা ২০০-এর বেশি হবে। ট্রাইব্যুনালে হেরে গেলে যে কেউ হাই কোর্ট এবং সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারবেন। সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে বন্দীশিবিরে নেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে আসাম সরকার। প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ অবৈধভাবে আসামে বসবাস করছে- এ দাবি তুলে কয়েক দশক আগে আসামে ‘বাঙালি খেদাও’ আন্দোলন শুরু হয়। নাগরিকপঞ্জিতে ঠাঁই পেতে হলে বাসিন্দাদের প্রমাণ করতে হবে তারা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে রাজ্যে আবাস গেড়েছেন।

গত বছরের জানুয়ারিতে প্রথম খসড়া নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ করা হয়। সেখানে মাত্র ১ কোটি ৮০ লাখ  মানুষের ঠাঁই হয়। অথচ আবেদন করেছিল ৩ কোটি ২৯ লাখ মানুষ; যা নিয়ে তীব্র সমালোচনা ও বিক্ষোভ শুরু হলে ওই বছর জুলাইয়ে সংশোধিত খসড়া     নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ পায়। নতুন তালিকায় ২ কোটি ৮৯ লাখ মানুষের নাম ঠাঁই পেলেও বাদ পড়েন উত্তর-পূর্ব আসামের প্রায় ৪০ লাখ বাসিন্দা।

 

সর্বশেষ খবর