মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
হংকংয়ের নির্বাচন

গণতন্ত্রপন্থিদের বড় সাফল্য

হংকংয়ের নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থিদের ব্যাপক জয়ের বিষয়টি সরকার গুরুত্বসহকারে দেখবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রশাসনিক প্রধান ক্যারি লাম। সেখানকার ১৮টি ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের ১৭টিতেই জিতেছেন গণতন্ত্রপন্থি প্রার্থীরা। বেইজিংবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর এই প্রথম হংকংয়ে কোনো নির্বাচন হলো, আর তাতে বিপুলসংখ্যক ভোটার ভোট দিয়েছেন। ভোটের ফলাফলে মিস লামের নেতৃত্বের সমালোচনা এবং চলমান বিক্ষোভের প্রতি জনসমর্থনের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। হংকংয়ে লাম একটি বিতর্কিত প্রত্যর্পণ আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে তার বিরোধিতায় বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ক্রমেই সহিংস হয়ে উঠেছে। গতকাল অনলাইনে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে লাম বলেছেন, নির্বাচনের ফলের প্রতি সরকার শ্রদ্ধাশীল। তিনি বলেন, ‘অনেকেই মনে করছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের অসন্তুষ্টি এবং সমাজের গভীরে নিহিত সংকটের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এই ফলাফলে।’

চীন সরকার মনে করেছিল, এই নির্বাচনে তাদের ভাষায় ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠরা’ জিতবে। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটাই হয়েছে। বেইজিংপন্থি অনেক প্রার্থী নির্বাচনে হেরে গেছেন। এবারের নির্বাচনে হেরে যাওয়া চীনপন্থি এক কাউন্সিলর জুলিয়ান হু বলেছেন, ‘সবকিছু একেবারে উল্টেপাল্টে গেছে।’ ছয় মাস ধরে চলা অস্থিরতার ধারাবাহিকতায় ভোট গ্রহণে বিশৃঙ্খলা তৈরি অথবা ভোট বাতিল হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও রবিবার তেমন কিছু ঘটেনি, শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটের দিনটি পার হয়। হংকং সরকার ও বেইজিংয়ের ধারণা ছিল, এ নির্বাচন তাদের প্রতি তথাকথিত ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ’ ভোটারের সমর্থনকে তুলে ধরবে, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তার বদলে বেইজিংপন্থি উল্লেখযোগ্য কিছু প্রার্থীও তাদের আসন হারিয়েছেন। হংকংয়ের স্থানীয় পরিষদের কাউন্সিলরদের রাজনৈতিক ক্ষমতা সীমিত। তাদের প্রধানত বাস রুট, আবর্জনা পরিষ্কার ইত্যাদি স্থানীয় ইস্যু নিয়েই কাজ করতে হয়। তাই স্বাভাবিক সময়ে স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন নিয়ে এখানে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যায় না। কিন্তু এবার পরিস্থিতি পুরো বিপরীত ছিল। টানা সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর প্রথমবারের মতো ভোটের মাধ্যমে নিজেদের মনোভাব তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন হংকংবাসী, যা তারা পুরোপুরি কাজে লাগান। ভোটের পর হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বলেন, ‘অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মুখে আমি সন্তুষ্টির সঙ্গে জানাচ্ছি, আজকের নির্বাচনের দিনটিতে আমরা তুলনামূলকভাবে শান্ত ও শান্তির পরিবেশে ছিলাম।’

সর্বশেষ খবর