কট্টরপন্থিরা জয়ের পথে
ইরানের রক্ষণশীল ও কট্টরপন্থিরাই আবার ক্ষমতায় আসছে। শুক্রবার দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর প্রাথমিক ফলাফলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে, কট্টরপন্থিরা বিপুল ভোটে জয়ী হচ্ছে। ফলে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির কট্টর সমর্থকরাই প্রেসিডেন্ট ছাড়া ইরানের মূল ক্ষমতায় বসছেন।
তবে চার বছর আগে সংস্কারপন্থিরাই ইরানের ক্ষমতায় এসেছিল। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিকে সংস্কারপন্থি এবং পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নে আগ্রহী বলে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ইরানের অন্যান্য ক্ষমতাকেন্দ্রের কারণে বৃহত্তম দল হওয়া সত্ত্বেও তাদের অনেক প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। বিশেষ করে গার্ডিয়ান কাউন্সিলের বাধার কারণে। সাধারণ নির্বাচন হলেও ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছর। ইরানের সঙ্গে বহির্বিশ্বের সম্পর্ক বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুইবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তবে কট্টরপন্থিরা সাধারণ নির্বাচনে জিতলে তা আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও ভোট কম পড়ার কারণে ভোটপ্রদানের শেষ সময় কয়েক দফায় বাড়ানো হয়। সরকার সমর্থিত সূত্র দাবি করছে, মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রগুলো খোলা ছিল। তবে বিরোধীরা বলছে ভিন্নকথা। আনুষ্ঠানিক হিসাব অনুযায়ী, রাজধানী তেহরানে ভোট প্রদানের হার আনুমানিক ২২ শতাংশ। জাতীয়ভাবে এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪০ শতাংশ। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই হার ছিল ৬২ শতাংশ। এদিকে ২৯০ আসনবিশিষ্ট পার্লামেন্টের ৪২ আসনের ফল ঘোষণা হয়েছে, তাতে চার-পঞ্চমাংশ আসনে জিতেছে কট্টরপন্থিরা।
কৃষ্ণা বসু আর নেই
না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং সাবেক তৃণমূল কংগ্রেস এমপি কৃষ্ণা বসু। গতকাল সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে (মেডিকা) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। অসুস্থতার কারণে কয়েক দিন ধরে এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন তিনি।
এ দিন কৃষ্ণা বসুর মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় কলকাতার নেতাজি ভবনে। সেখানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার মৃতদেহ শায়িত রাখা হয়। বিকালে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
১৯৩০ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন কৃষ্ণা বসু। তার স্বামী ছিলেন ভারতের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্র বসুর বড় ভাই শরৎচন্দ্র বসুর পুত্র শিশির বসু। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পাস করেন তিনি। এরপর ৪০ বছর ধরে সিটি কলেজেই ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যাপনা করেছেন। পরবর্তীকালে সিটি কলেজের প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করেন কৃষ্ণা বসু। শিক্ষা জগতের পাশাপাশি রাজনীতিতেও নাম লিখেছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের টিকিটে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সাংসদ নির্বাচিত হন কৃষ্ণা। এরপর ওই একই কেন্দ্র থেকে ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জয়পান তিনি। ভারতের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারপারসন পদেও ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের এই সাংসদ। আনন্দবাজার, যুগান্তর, অমৃত বাজার, দ্য স্টেটসম্যান, দ্য টেলিগ্রাফ-সহ নামি পত্রিকায় নিয়মিত কলামও লিখেছিলেন তিনি।
কৃষ্ণা বসু রেখে গেছেন দুই পুত্র সুমন্ত্র এবং সুগত বসু এবং এক কন্যা শর্মিলাকে। সুগত বসু একসময়ের তৃণমূলের টিকিটে যাদবপুর থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
কৃষ্ণা বসুর মৃত্যুতে বাংলায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি টুইট করে জানান ‘যাকে আমি ভালোবাসতাম, শ্রদ্ধা করতাম, প্রশংসা করতাম-এমন একজন ব্যক্তির মৃত্যু হলো। সাবেক তৃণমূল সাংসদ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী ড. শিশির বসুর স্ত্রী কৃষ্ণা বসুর মৃত্যুতে আমি মর্মাহত ও দুঃখিত। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্য হওয়ায় একজন সমাজ সংস্কারক, প্রসিদ্ধা কবি ও সাহসী শিক্ষাবিদ হিসেবে সম্মানিত ছিলেন।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন- সুমন্ত্র, সুগত এবং শর্মিলা ছাড়াও সমগ্র তৃণমূল পরিবারের মা ছিলেন কৃষ্ণা দি। ভারতীয় সমাজে এবং বাংলা সংস্কৃতিতে তার অসামান্য অবদান কখনো ভোলার নয়।’
শিকারের অনুমতি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে বিখ্যাত নর্থ আমেরিকান ভালুক (বাদামি রঙের) শিকার করার জন্য প্রয়োজন মাত্র ১ হাজার ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৫ হাজার টাকা। সঙ্গে থাকতে হবে লটারি ভাগ্যও। প্রথমটিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের। যেখানে সমস্যা, সেই লটারিতেও অবশ্য উতরে গেলেন ট্রাম্পপুত্র। এখন বাদামি রঙের ভালুক শিকারে আর বাধা থাকল না তার।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর, আলাস্কার বেরিং উপকূল অঞ্চলে এই ভালুকের যথেষ্ট উপদ্রব রয়েছে। তবে স্থানীয় ছাড়াও বাইরের কেউ শিকার করতে পারবেন- এমন উদ্যোগ নিয়েছে আলাস্কার প্রশাসন। ২৭টি এমন এলাকায় ভালুক শিকারের অনুমতির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন ট্রাম্প জুনিয়রসহ তিনজন। আলাস্কার বন বিভাগের পক্ষ থেকে জানা গেছে, লটারির মাধ্যমেই নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট-পুত্র। এরপর হাজার মার্কিন ডলার এবং ১৬০ ডলার (শিকারের লাইসেন্স) দিলেই ভালুক শিকারে যেতে পারবেন ট্রাম্প জুনিয়র।
প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র এর আগেই শিকার করতে আলাস্কা এবং কানাডার বহু এলাকায় সফর করেছেন। চলতি বছরের শেষেও হরিণ ও হাঁস শিকারে ফের আলাস্কা আসার কথা তার।