দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের সদর দফতর ‘মরকজ নিজামুদ্দিন’-এ একটি সমাবেশে যোগ দিয়ে ঘরে ফেরা অন্তত সাতজন, কারও কারও মতে দশজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর ওই মসজিদটিকে ভারতে মহামারী ছড়ানোর অন্যতম ‘হটস্পট’ বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ওই মসজিদটিতে একটি সমাবেশ উপলক্ষে এ মাসের মাঝামাঝি অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার লোক সমবেত হয়েছিলেন। শহরের একটি অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকায় একটি ছয়তলা ভবনের ডরমেটরিতে তারা সবাই গাদাগাদি করে ছিলেন। এর মধ্যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুসলিমরা যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন বহু বিদেশি নাগরিকও। ওই সমাবেশে যোগ দিয়ে নিজেদের রাজ্যে ফিরে যাওয়ার পর সোমবার তেলেঙ্গানাতে ছয়জন ব্যক্তি করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন। এর আগে নিজামুদ্দিন থেকে ফিরে গিয়ে কাশ্মীরের এক ধর্মীয় নেতাও শ্রীনগরে কয়েক দিন আগে মারা যান। এ ছাড়া তামিলনাড়ুতে দুটি এবং দিল্লিতে আরও একটি করোনাভাইরাস-জনিত মৃত্যুর সঙ্গেও দিল্লির এই তাবলিগ জামাতের সংযোগ টানা হচ্ছে। এদিকে মরকজ নিজামুদ্দিনে অবস্থানরত প্রায় ৩০০ ব্যক্তিকে করোনাভাইরাসের মতো উপসর্গ নিয়ে সোমবার দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ২৪ জনের গতকাল পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ এসেছে। মসজিদ ভবনটিকে গতকাল সকালে পুলিশ সিল করে দেয়। গতকাল সেখানে প্রায় ৭০০ লোক ছিলেন। তাদের সবাইকে দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। তাবলিগ জামাতের মূল সমাবেশটি ছিল মার্চের ৮ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত। তবে তার অনেক আগে থেকে এবং তার পরেও শত শত ব্যক্তি ওই মরকজ নিজামুদ্দিনে অবস্থান করছিলেন। সেখানে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, মিয়ানমার, কিরগিজস্তান, সৌদি আরব, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, জিবুতি, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ফিজি, ফ্রান্স বা কুয়েতের মতো বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রায় ৩০০ তাবলিগ সদস্যও ছিলেন। এই বিদেশি নাগরিকের প্রায় সবাই পর্যটক ভিসা নিয়ে ভারতে গিয়ে ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন, যা আইন বিরুদ্ধ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এদের প্রত্যেককে ব্ল্যাক লিস্টেড (কালো তালিকাভুক্ত) করে ভারতে আসা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। ভারতে গতকাল পর্যন্ত ১২ জন করোনায় মারা গেছেন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ১২৫১ জন। -বিবিসি বাংলা