বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

গভর্নরদের সঙ্গে সংঘাতে ট্রাম্প

গভর্নরদের সঙ্গে সংঘাতে ট্রাম্প

করোনা মহামারীর জেরে আমেরিকায় মৃত্যুমিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। তার মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেন দেশের একাধিক গভর্নর। তাদের মধ্যে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট, দুই দলের সদস্যই আছেন। বিবাদের কারণ, কবে  থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালু হবে, তার সিদ্ধান্ত কে নেবেন। ট্রাম্পের দাবি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনিই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সর্বোচ্চ অধিকারী। অন্যদিকে, গভর্নররা মনে করেন, রাজ্যের ক্ষেত্রে তাদেরই এ বিষয়ে প্রাথমিক দায়িত্ব। যা নিয়ে চরম ডামাডোল চলছে মার্কিন মুলুকে।

তার মধ্যে ট্রাম্প আবার দাবি করেছেন, তার দেশের অর্থনীতি সময়ের আগেই ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু কীভাবে, তার ব্যাখ্যা দেননি প্রেসিডেন্ট। এ জন্য অবশ্য তিনি বলেন, প্রাদেশিক গভর্নররা স্কুল, রেস্তোরাঁ, দোকান বন্ধ করে রাখলেও অর্থনীতিকে সচল করতে সেগুলো খুলে দিতে বাধ্য করতে পারেন তিনি। কিন্তু আমেরিকার যা অবস্থা, তাতে মানুষ যদি বাইরে বেরোতে ভরসা না পান, তাহলে তাদের কীভাবে  বোঝাবেন প্রেসিডেন্ট? তারও কোনো ব্যাখ্যা নেই ট্রাম্পের কাছে। তার এই মন্তব্যের ব্যাপারে নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো বলেছেন, ‘রাজা ট্রাম্পের’ নির্দেশ মানবেন না তিনি।

করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত নিউইয়র্কে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯৫ হাজার পেরিয়ে গেছে। তবে নাছোড় ট্রাম্প টুইটে কুয়োমোর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘উনি মনে হয় স্বাধীনতা চাইছেন।  সেটা হবে না।’ শুধু কুয়োমো নন, গভর্নরদের বেশির ভাগই বলেছেন, তারা তথ্য, বিজ্ঞান, জনস্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞদের কথা মাথায়  রেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনো রাজনীতি দ্বারা চালিত হবেন না।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, করোনার প্রকোপ ও ঝুঁকি অনেকটা কমে গেলে জনজীবন স্বাভাবিক করতে হবে। কবে, কীভাবে তা হবে, তা নিয়ে যদি প্রেসিডেন্ট ও গভর্নররা বিপরীত মেরুতে অবস্থান করেন, তাহলে কী হবে। ওয়াশিংটন ও প্রাদেশিক রাজধানীর বিপরীতধর্মী নির্দেশ কীভাবে পালন করবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কর্মীরা। বাস্তবে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই ট্রাম্পের কাজকর্মে হতচকিত হয়ে পড়ছেন প্রশাসনের কর্তারা। যেমন, সোমবার তিনি দাবি করেন, প্রাথমিক হুঁশিয়ারি মেনে তিনি সঙ্গে সঙ্গেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কোনো ঢিলেমি দেননি। তা প্রমাণ করতে মঞ্চে হাজির করেন ডা. অ্যান্টনি ফাউচিকে। যিনি আমেরিকার করোনাযুদ্ধের  সেনাপতি। অথচ, একদিন আগেই ফাউচিকে সরানোর দাবি তোলা একটি টুইট ট্রাম্প রিটুইট করেন। সোমবার  অবশ্য তার দাবি, ফাউচিকে সরানোর কোনো পরিকল্পনা নেই তার। অন্যদিকে, ফাউচি দাবি করেছিলেন, সময়ে ব্যবস্থা নিলে মৃত্যুমিছিল ঠেকানো  যেত। এতেই শেষ নয়। সোমবার ব্রিফিংয়ের ফাঁকেই চালিয়ে  দেওয়া হয় প্রচারমূলক ভিডিও। তাতে করোনা মোকাবিলায় ট্রাম্প কী কী করেছেন, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট গভর্নররা তার প্রশংসা করে কী বলেছেন, সে সব তুলে ধরা হয়। তার বিরুদ্ধে  লেখার জন্য সংবাদমাধ্যমকে তুলাধোনা তো আছেই। কিন্তু তারপরও লকডাউন তোলার বিষয়ে একক সিদ্ধান্ত নিতে পুরো   কর্তৃত্ব চান ট্রাম্প। কিন্তু গভর্নররা কিছুতেই তাতে রাজি নন।

সর্বশেষ খবর