মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
করোনা ছড়িয়েছে চীন

খতিয়ান দিয়ে ১৩ হাজার কোটি পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি জার্মানির

খতিয়ান দিয়ে ১৩ হাজার কোটি পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি জার্মানির

এক ছোট্ট ভাইরাসেই পৃথিবীকে স্তম্ভ করে দিয়েছে। পৃথিবীর কোনো মানুষ এখন সাহস নিয়ে বাইরে বেরুতে পারে না। শিল্পপতিরা তাদের শিল্পকারখানা খুলতে পারে না। শ্রমিকরা যেতে চায় না কোনো উৎপাদনে। অসংখ্য মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি, বিশ্ব অর্থনীতিকে ফের ‘মহা মন্দা’র দিকে ঠেলে দিয়েছে কভিড-২০। যেহেতু ভাইরাসটির উৎসস্থল চীন, তাই বেইজিংয়ের ওপর বেজায় খাপা আমেরিকা ও ইউরোপ। ইতিমধ্যেই বেইজিংকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। এবার আরও একধাপ এগিয়ে চীনের কাছে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে জার্মানির একটি সংবাদমাধ্যম। চীনের কাছে ১৩ হাজার কোটি পাউন্ডের ক্ষতিপূরণ চেয়েছে জার্মানি। করোনা মহামারীর জন্য বেইজিংকে দায়ী করে সর্ববৃহৎ জাতীয় পত্রিকা ‘বিল্ড’-এ প্রকাশিত একটি মন্তব্য প্রতিবেদনে এমন দাবি জানানো হয়েছে।

চীনকে তুলাধোনা করে প্রবন্ধে পর্যটন, উৎপাদন শিল্প-সহ বিভিন্ন খাতে করোনার জেরে হওয়া লোকসানের খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে। কড়া ভাষায় বেইজিংয়ের সমালোচনা করে ওই প্রবন্ধে বলা হয়েছে, গোটা বিশ্বের কাছে ইচ্ছাকৃতভাবে করোনা-সংক্রান্ত তথ্য গোপন করেছে শি জিনপিং প্রশাসন। সঠিক সময়ে বেইজিং সব তথ্য প্রকাশ করলে এই মহামারীকে ঠেকানো যেত। এদিকে সব অভিযোগ খারিজ করে পাল্টা সংবাদপত্রটির বিরুদ্ধে উগ্র জাতীয়তাবাদ উসকে দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছে বেইজিং।

স্বচ্ছতার অভাব থাকার জন্য চীনকে বার বার আক্রমণ করে বক্তব্য দিচ্ছেন ট্রাম্প ও তার সিনিয়র সহযোগীরা। যে উহান শহর থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছিল এ সপ্তাহে সেখানে নতুন করে ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। উহানের একটি পশুর মার্কেট থেকে নয় বরং ভাইরাস নিয়ে  গবেষণাকারী  একটি  ল্যাবরেটরি থেকে

করোনাভাইরাসের বিস্তার বলে যুক্তরাষ্ট্র যে দাবি করেছে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে ব্রিটেনও। তার সঙ্গে এ সপ্তাহে জার্মানির সর্ববৃহৎ প্রচারিত ট্যাবলয়েড পত্রিকা ‘বিল্ড’ তথ্যবোমা ফাটিয়েছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের ক্ষোভের আগুনের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। বলা হয়েছে, চীনের কাছে ১৩ হাজার কোটি পাউন্ড ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইনভয়েস পাঠিয়েছে জার্মানি।

এতে পর্যটন খাতে ২৭০০ কোটি ইউরো বা ২৩৫২.০২ কোটি পাউন্ড ক্ষতি দেখানো হয়েছে। চলচ্চিত্রশিল্পে ৭২০ কোটি ইউরো বা ৬২৭.২১ কোটি পাউন্ড, জার্মানির বিমান সংস্থা লুফথানছায় ঘণ্টাপ্রতি ১০ লাখ ইউরো বা ৮৭ লাখ পাউন্ড এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায় ৫০০০ কোটি ইউরো বা ৪৩৫৫.৬০ কোটি পাউন্ড ক্ষতি দেখানো হয়েছে। ‘বিল্ড’-এর হিসাব মতে, এই ক্ষতি জার্মানিতে যদি জাতীয় প্রবৃদ্ধি শতকরা ৪.২ ভাগ পতন হয়, তাহলে মাথাপ্রতি ক্ষতি হবে ১৭৮৪ ইউরো বা ১৫৫০ পাউন্ড। এ নিয়ে ‘বিল্ড’-এর সংবাদ শিরোনাম ‘হোয়াট চায়না ওউস আস’। অর্থাৎ আমাদের কাছে চীনের যে ঋণ।

এই ইনভয়েসের বিষয়ে চীন বলেছে, এর মধ্য দিয়ে অহেতুক বিদেশভীতি এবং জাতীয়তাবাদ উসকে দেওয়া হচ্ছে। তবে চীনের এমন সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন ‘বিল্ড’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক জুলিয়ান রিচেল্ট। তিনি বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্ব যে ভয়াবহ অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে, তার ক্ষতিপূরণ চীন দেবে কিনা সেটা আমাদের পত্রিকার মাধ্যমে আমরা জানতে চেয়েছি। শি জিনপিং, আপনার সরকার এবং আপনার বিজ্ঞানীরা অনেক আগেই জানতেন যে, করোনাভাইরাস অতিমাত্রায় সংক্রামক। কিন্তু আপনি বাকি বিশ্বকে অন্ধকারে রেখেছেন এ বিষয়ে। যখন পশ্চিমা গবেষকরা জানতে চেয়েছেন উহানে কী কাজ হচ্ছিল, তখন আপনার শীর্ষ বিশেষজ্ঞরা এর কোনো উত্তর দেননি। প্রকৃত সত্য প্রকাশ না করতে আপনি খুব গর্বিত ছিলেন এবং বিষয়টিকে খুব বেশি জাতীয়তাকরণ করেছেন। বিষয়টিকে আপনি জাতীয়ভাবে অবজ্ঞা করেছেন।

সর্বশেষ খবর