বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রে আরও ৪৮৪ বিলিয়ন ডলার করোনা প্রণোদনা

বঞ্চিত পুুলিশ চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মী

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে আরও ৪৮৪ বিলিয়ন ডলার করোনা প্রণোদনা

রেস্টুরেন্ট, গ্রোসারি, সুপার মার্কেট, খুচরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য ৩২১ বিলিয়ন ডলার প্রণোদনা, করোনায় নাজুক অবস্থায় নিপতিত ক্ষুদ্র-বতবসাসহ কমিউনিটি ব্যাংকের জন্য ৬০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ, হাসপাতালগুলোর সরঞ্জামের জন্য ৭৫ বিলিয়ন ডলার, টেস্টিং কিট ক্রয়ের জন্য ২৫ বিলিয়ন, আরও ১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে ইন্স্যুরেন্সহীন (অবৈধ অভিবাসী) লোকজনের করোনা চিকিৎসার জন্য। স্থানীয় সময় ২১ এপ্রিল বিকালে ইউএস সিনেটে কণ্ঠভোটে ‘অন্তর্বর্তীকালীন করোনা ভাইরাস রিলিফ বিল’ নামে ৪৮৪ বিলিয়ন ডলারের এই বিল পাস হয়। এতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সম্মতি রয়েছে বলে ট্রাম্প নিজেই প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন। এই বিলের পরিপূরক বিলটি কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হবে ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার- এ নিশ্চয়তা দিয়েছেন স্পিকার ন্যান্সি পেলসি। প্রসঙ্গত, করোনায় ১৯ মার্চ থেকে প্রায় সারা আমেরিকায় লকডাউনের পরিপ্রেক্ষিতে ২২ মিলিয়নের বেশি মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। এদের বেকারভাতা প্রদানের পাশাপাশি ট্যাক্স প্রদানকারী স্বল্প আয়ের (বার্ষিক একক ৭৫ হাজার ডলার এবং দম্পতির দেড় লাখ ডলার আয়) আমেরিকানদের কাছে ইতিমধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মাথাপিছু ১২০০ ডলার এবং শিশুদের জন্য মাথাপিছু ৫০০ ডলার করে পাঠানো হয়েছে ‘করোনা স্টিমুলাস’ প্রোগ্রামের আওতায়। এয়ারলাইনসসহ বিভিন্ন করপোরেশনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেও মোটা অঙ্কের প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। বাড়ির মালিকরা ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধের সময় পেয়েছেন দুই মাস। তবে ভাড়াটেদের জন্য এখনো কোনো ব্যবস্থা-সংবলিত বিল পাস হয়নি। করোনা প্রণোদনার আলোকে এ নিয়ে চারটি বিল পাস হতে যাচ্ছে।

করোনার গতিপ্রকৃতির আলোকে অঙ্গরাজ্যসমূহ পুনরায় কর্মচঞ্চল হয়ে ওঠার প্রাথমিক শর্ত হিসেবে সব নাগরিকের অ্যান্টিবডি টেস্ট সম্পন্নের যে দাবি ছিল, এর পরিসমাপ্তি ঘটবে এই বিল পাসের পর। কারণ অঙ্গরাজ্যসমূহের গভর্নররা পাবেন মোটা অর্থ এবং তা দিয়ে চাহিদামাফিক টেস্টিং কিট ক্রয় করতে সক্ষম হবেন। উভয় দলের সম্মতিতে সিনেটে এই বিল পাসের পরিপ্রেক্ষিতে সারা আমেরিকায় গভর্নরদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে সৃষ্ট তিক্ততার পরিসমাপ্তি ঘটেছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। এর বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই মঙ্গলবার বিকালে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে নিউইয়র্কের স্টেট গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমোর বৈঠক হয়।

এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৫ পুলিশ অফিসার, শতাধিক চিকিৎসক এবং অর্ধশতাধিক স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক হাজার। এদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো বোনাস ঘোষণা করা হয়নি কিংবা কংগ্রেসের কোনো বিলেই এ বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই। এ নিয়ে জনমনেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি তাদের জন্য কোনো ধরনের বোনাস দূরের কথা, নগদ অর্থ প্রদানের বিষয়ে কেন এত অনীহা সে প্রশ্ন সবার। ২১ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের সামনে রেজিস্টার্ড নার্সদের বেশ কয়েক ডজন ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রেখে বিক্ষোভ করেন। তারা স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। তারা উল্লেখ করেন, নার্সরা যদি নিজের স্বাস্থ্য-সুরক্ষার সামগ্রী না পান, তাহলে রোগীর সেবা যথাযথভাবে করবেন কীভাবে। এ সময় সিক্ত কণ্ঠে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের নাম পাঠ করা হয়। এদিকে জর্জিয়া, সাউথ ক্যারোলিনা, ফ্লোরিডা,   টেনেসিসহ বেশ কটি অঙ্গরাজ্যে অবরোধ অবস্থার অবসানের পরিকল্পনার কথা বলেছেন স্টেট গভর্নররা। মিশিগান, ভার্জিনিয়া, মেরিল্যান্ড, পেনসিলভেনিয়াসহ  বেশ কটি সিটিতে কদিন ধরেই বিক্ষোভ হচ্ছে অবরোধ তথা লকডাউনের প্রতিবাদে।

সর্বশেষ খবর