সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

ট্রাম্পের আগ্রহের হাইড্রক্লোরোকুইন নিয়ে সতর্কবার্তা যুক্তরাষ্ট্রেই

ট্রাম্পের আগ্রহের হাইড্রক্লোরোকুইন নিয়ে সতর্কবার্তা যুক্তরাষ্ট্রেই

প্রেসক্রিপশন আগেই দিয়ে ফেলেছিলেন। বলেছিলেন ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন-ই করোনা-যুদ্ধে ‘গেমচেঞ্জার’। আর এই ওষুধের সবচেয়ে বেশি মজুদ ভারতে। এ ওষুধ তার চাই। সুতরাং ভারতকে হুমকি। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না দিলে ভারতকে চরম মূল্য দিতে হবে। হুমকিতে কাজ হয়। ভারত সরকার বিমান ভর্তি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন আমেরিকায় পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সেই ওষুধের ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করল ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। তাদের পরামর্শ, এই ওষুধ প্রয়োগের আগে করোনা-নিরাময়ে ওষুধটির কার্যকারিতা সম্পর্কে ভালো করে জানা প্রয়োজন।

ট্রাম্পের দাওয়াই বাতলানো অবশ্য নতুন কথা নয়। গত পরশু তার খেয়াল হয়, জীবাণুনাশক ইনজেক্ট করে ফুসফুস সাফ করা যায় কি না। জোরালো আলো ঢুকিয়ে করোনা তাড়ানো নিয়েও ভাবতে বলেন তিনি। দিনের শেষে অবশ্য প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনাদের কথা মাথায় রেখেই একটু মজা করেছিলাম। দেখতে চেয়েছিলাম কী হয়।’ আজ অবশ্য হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বলেছেন, ‘আমি ডাক্তার নই।’

এক মার্কিন হাসপাতালের চিকিৎসকরা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তাতে তাদের বক্তব্য, আলাদা করে কোনো উপকারিতা নেই ওষুধটির। রিপোর্টটি পুনর্বিচারের জন্য বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আপনারা দুই রকম কথাই শুনে থাকতে পারেন। আমি চিকিৎসক নই। পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ওষুধটি যদি সাহায্য করে, তা হলে তো খুব ভালো। যদি কাজ না করে, তা হলে ব্যবহার করা হবে না।’ এফডিএ-র বক্তব্য, ‘যদি এটা কাজ করে, সবাই সমর্থন করবে। বিষয়টা দেখা হোক... কথা বলা হবে ওঁর সঙ্গে।’ তারা জানিয়েছে, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইনের ব্যবহার যে হচ্ছে, সে খবর তাদের কাছে রয়েছে। এফডিএ এ-ও জানিয়েছে, ওষুধটি দিয়ে বেশ কিছু রোগীর হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। বিপজ্জনকভাবে বেড়েছে হৃদযন্ত্রের গতিও।

সম্প্রতি ফ্রান্সের মার্সেইয়ের একটি গবেষক দল দাবি করেছিল, ৮০ জন করোনা রোগীকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে অ্যাজিথ্রোমাইসিন দেওয়া হয়েছিল। ফরাসি গবেষকদের দাবি ছিল, ৯৩ শতাংশ রোগী তাতে সুস্থ হয়ে ওঠেন। যদিও মার্কিন চিকিৎসকরা ওই   রিপোর্টের সত্যাসত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। চীনের    কিছু গবেষকও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের গুণমান নিয়ে দাবি তুলেছিলেন। তাদের যুক্তিও উড়িয়ে দিয়েছে এফডিএ। মার্কিন সংস্থাটির বক্তব্য, কোনো জোরদার প্রমাণ দেখাতে পারছে না কেউ।

সর্বশেষ খবর