সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
নীল নদের পানি

মিসর-ইথিওপিয়া সুদান ঐকমত্য

নীল নদের পানি ব্যবহারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে আফ্রিকার তিন দেশ-মিসর, ইথিওপিয়া আর সুদান। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি হতে যাচ্ছে। তিন দেশের মধ্যস্থতাকারী আফ্রিকান ইউনিয়নের অনলাইন বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। খবর রয়টার্স ও আলজাজিরা

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নীল নদ থেকে মিসরের পানি সরবরাহকে সুরক্ষিত রেখে কীভাবে ইথিওপিয়া জলাধারটি পূর্ণ করে তাদের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি পরিচালনা করবে, তা নিয়ে কয়েক বছর ধরে এই তিনটি দেশের মধ্যে আলোচনা চললেও কোনো সুরাহা হচ্ছিল না। আল জাজিরা বলছে, ‘ব্লু নাইল ড্যাম’ নামের এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশগুলোর মধ্যে এক দশকের বেশি সময় ধরে চলতে থাকা সেই বিরোধের অবসান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শ্বেত নদ ও নীলাভ নদ নামের দুই উপ-নদ সুদানের রাজধানী খার্তুমের কাছে মিলিত হয়ে নীল নদ নামে প্রবাহিত হয়েছে। সুদান থেকে মিসরের ভিতর দিয়ে নদটি ভূমধ্যসাগরে গিয়ে পড়েছে। সুদানের সীমান্ত থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে নীলাভ নীল নদের ওপর ‘দ্য গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসান্স ড্যাম (জিইআরডি)’ তৈরি করা হচ্ছে। এই উপ-নদটিই নীলের পানির প্রধান উৎস আর এর উৎপত্তি ইথিওপিয়ায়। আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ ওই তিন দেশের নেতাদের মধ্যে এক অনলাইন বৈঠকের একদিন পর শনিবার ইথিওপিয়ার পানিমন্ত্রী সেলেশি বিকালে জানিয়েছেন, দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে তিন দেশের মধ্যে মতৈক্য হয়েছে।

৪০০ কোটি ডলারের এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি থেকে ছয় হাজার ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে এবং এ প্রকল্পটি তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য বলে জানিয়ে আসছে ইথিওপিয়া। অপরদিকে নীল নদ মিসরের প্রয়োজনীয় মিঠা পানির ৯০ শতাংশের জোগান দেয়। এক বিবৃতিতে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, নীল নদ ও গ্র্যান্ড রেনেসান্স বাঁধ ‘আফ্রিকার ইত্যু আর এর সমাধান অবশ্যই আফ্রিকা থেকে আসবে’ বলে এই তিনটি দেশ একমত হয়েছে।

এদিকে, নীল নদের ওপর নির্ভরশীল আরেকটি দেশ সুদানও ইথিওপিয়া ও মিসরের বিরোধ নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সুদানের প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামডকও নীল নদের অববাহিকার দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে চুক্তির প্রযুক্তিগত খাতগুলো খতিয়ে দেখার ব্যাপারে তিন দেশই কাজ শুরু করবে।

অপরদিকে, শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও কনফারেন্সের পর মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি বলেছেন, ‘সব পক্ষের মিলিত আলোচনার পর আশা করি কোনো পক্ষই এমন কিছু করবে না, যা অন্যায্য মনে হতে পারে।’

সর্বশেষ খবর