মার্কিন কংগ্রেসের এক কমিটির শুনানিতে অংশ নিয়েছেন ফেসবুক, গুগল, অ্যামাজন এবং অ্যাপলের প্রধান নির্বাহীরা। ডিজিটাল যুগে অ্যান্টিট্রাস্ট আইন কীভাবে প্রয়োগ করা হবে, এ নিয়েই ছিল শুনানি। অ্যামাজনের জেফ বেজোস, অ্যাপলের টিম কুক, ফেসবুকের মার্ক জুকারবার্গ এবং গুগলের সুন্দর পিচাই এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ শুনানিতে অংশ নেন। এই প্রথমবারের মতো চার টেক জায়ান্টের প্রধান নির্বাহীকে একসঙ্গে কোথাও দেখা গেল। আইনপ্রণেতারা অভিযোগ করেন, এই চার প্রতিষ্ঠান অনলাইনের একাধিপত্যের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার সুযোগ নষ্ট করছেন এবং বাজার দখলের মাধ্যমে ভোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করছেন। সমালোচকরা দীর্ঘদিন ধরে কড়া বিধিনিষেধ এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছেন। শুনানিতে নির্বাহীরা অবশ্য কীভাবে তাদের প্রতিষ্ঠান ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ করছে এবং প্রতিযোগিতা উৎসাহিত করছে তার পক্ষে তথ্যসহ যুক্তি তুলে ধরেন। তবে শুনানিতে কিছু প্রশ্নের ক্ষেত্রে তারা সরাসরি উত্তর দিতে ব্যর্থ হন।
ইনস্টাগ্রাম ইস্যু : প্রতিদ্বন্দ্বী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরম ইনস্টাগ্রাম কিনে নেওয়ার ঘটনায় জুকারবার্গকে কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় শুনানিতে। কংগ্রেসের বিচার কমিটির নেতা ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য জেরল্ড নাডলার জুকারবার্গকে বলেন, ইনস্টাগ্রাম কেনার বিষয়ে ফেসবুক থেকে পাওয়া কাগজপত্র বেশ ‘গোলমেলে’। ফেসবুকের নথিতে দেখা গেছে, ছবি শেয়ার করার প্ল্যাটফরম ইনস্টাগ্রাম এক সময় ফেসবুকের জন্য ‘বেশ ক্ষতিকর’ হয়ে উঠতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন জুকারবার্গ।
অ্যামাজনের তথ্য চুরি : অ্যামাজন একই সঙ্গে অনলাইন মার্কেটপ্লেস এবং খুচরা বিক্রেতার ভূমিকা নেওয়ায় অন্য খুচরা বিক্রেতারা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে মনে করে কংগ্রেসের কমিটি। এমনকি বিক্রেতারদের তথ্য চুরি করে নিজেদের পণ্য তৈরি করার অভিযোগও ওঠে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে। শুনানিতে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস জানিয়েছিলেন, অ্যামাজন বিক্রেতার তথ্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে নীতি থাকলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা যে ভঙ্গ করা হয়নি তা তিনি ‘নিশ্চিতভাবে’ বলতে পারেন না। অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন ডিভাইসে নিজেদের অ্যাপ উপস্থাপনের জন্য অ্যাপলের নিজস্ব পেমেন্ট ব্যবস্থা ব্যবহারে বাধ্য করার।গুগলের প্রধান নির্বাহী পিচাইকে প্রশ্ন করা হয় তথ্য সুরক্ষা ও অপব্যবহার নিয়ে। থার্ড পার্টির তথ্য নিজেদের বলে চালিয়ে দেওয়া এবং নিজেদের সুবিধাজনকভাবে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে গুগলের বিরুদ্ধে। পিচাই অবশ্য বলেন, কেবল ‘আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়’ এমন তথ্যই গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্লক করে। বাকি সব তথ্য কীভাবে ব্যবহারকারীদের সামনে উপস্থাপিত হবে, তা অ্যালগরিদমের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।-ডয়েচে ভেলে।