সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন বিদেশি মিশনে নিয়োজিত মিয়ানমারের আরও চার কূটনীতিক। এ নিয়ে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে এমন অবস্থান নেওয়া মিয়ানমারের বিদেশি মিশনের কূটনীতিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই ডজনেরও বেশি। এ খবর দিয়েছে মিয়ানমারের অনলাইন ইরাবতী। তারা ঘোষণা দিয়েছেন, দেশে সামরিক জান্তার সঙ্গে আর কাজ করবেন না। ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর শান্তিপূর্ণ নাগরিক বিক্ষোভের বিরুদ্ধে সরকারের সহিংসতার বিরুদ্ধে তাদের এ অবস্থান। এর মধ্যে রয়েছেন প্যারিস ও ফ্রান্সে মিয়ানমারের দূতাবাসের দুজন সেকেন্ড সেক্রেটারি। তারা ১৮ মার্চ বলেছেন, গণঅসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন তারা। ফলে সামরিক জান্তার প্রতিনিধিত্ব তারা আর করেন না।
ওদিকে জাপানের রাজধানী টোকিও এবং ইতালির রাজধানী রোমে মিয়ানমারের দূতাবাসের দুজন কূটনীতিকও একই কথা বলেছেন। তারা গণঅসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন ১৯ মার্চ। প্যারিসে মিয়ানমারের দূতাবাসে কাজ করেন ফি গ্রেস মি এবং উট য়ি ফিও ছিট। তারা বলেছেন, আমরা গণঅসহযোগ আন্দোলেনে যোগ দিচ্ছি। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের কারণে আমরা গভীরভাবে ভারাক্রান্ত এবং হতাশাগ্রস্ত। এ ছাড়া অভ্যুত্থানবিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করেছে সামরিক জান্তা। এ পর্যন্ত দেশটিতে কমপক্ষে ২৩৮ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা।
এ অবস্থায় ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফল মেনে নিয়ে ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন কূটনীতিকরা।যেসব কূটনীতিক গণঅসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন তারা বলছেন, শান্তিপূর্ণভাবে মত প্রকাশে নিজেদের অধিকার চর্চা করছেন তারা এবং মিয়ানমারের জনগণের সঙ্গে একত্রে অবস্থান করছেন। তবে দূতাবাসে নিজেদের পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তারা। এই গণঅসহযোগ আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন হাজার হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তারা প্রতিদিনই রাজপথে নামছেন। এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের বিদেশি মিশনে নিয়োজিত দুই ডজনের বেশি কূটনীতিক সামরিক জান্তার সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জাপান ও সুইজারল্যান্ডের কূটনীতিকরা। টোকিওতে মিয়ানমার দূতাবাসের কিছু কূটনীতিক বলেছেন, তাদের মধ্য মার্চে সামরিক জান্তা জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের দূত কাইওয়া মোয়ে তুন প্রথমে র্যাংক ভঙ্গ করেন। তিনি জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় জানান, ক্ষমতাচ্যুত এনএলডি সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। এ সময় তিনি মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা আহ্বান করেন।