একে একে চলে গেল ৭৬ বছর। কিন্তু ১৯৪৫ সালে যুদ্ধের নামে যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিল সেই স্মৃতি কোনো দিন হারিয়ে যাবে না। ওই সময় প্রথম কোনো দেশে আণবিক বোমার ব্যবহার হয়েছিল। কোনো যুদ্ধে আণবিক বোমার ব্যবহারের একমাত্র উদাহরণও স্থাপন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে আণবিক বোমা হামলা চালিয়েছিল তারা, যার বিভীষিকা আজও বয়ে বেড়াচ্ছে মানুষ।
প্রথম বোমা নিক্ষেপ : ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট। ঘড়িতে বাজছে ঠিক সকাল সোয়া ৮টা। জাপানের হিরোশিমা নগরীতে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান ‘এনোলা গে’ থেকে ছোড়া হয় প্রথম আণবিক বোমা ‘লিটল বয়’। মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যায় গোটা নগরীর বাড়িঘর, দালানকোঠা। আণবিক বোমার তেজস্ক্রিয়তায় সঙ্গে সঙ্গেই মারা যান সেখানকার ২০ ভাগ মানুষ। বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে লক্ষাধিক।
দ্য এনোলা গে : আদতে হিরোশিমায় বোমা হামলার পরিকল্পনা ছিল ওই বছরের ১ আগস্ট। কিন্তু টাইফুনের কারণে তা বাতিল করা হয়। পাঁচ দিন পর ‘এনোলা গে’ ১৩ জন ক্রু নিয়ে হামলার জন্য রওনা হয়।দ্বিতীয় বোমা হামলা : হিরোশিমায় হামলার তিন দিন পর অর্থাৎ ৯ আগস্ট আমেরিকা দ্বিতীয় আণবিক বোমাটি ফেলে নাগাসাকি শহরে। আসলে তাদের লক্ষ্য ছিল কিয়োটো। কিন্তু এতে মার্কিন প্রতিরক্ষাবাহিনী সায় না দেওয়ায় নাগাসাকিকে বেছে নেওয়া হয়। এই বোমাটির নাম ছিল ‘ফ্যাট ম্যান’। এতে বিস্ফোরক ছিল ২২ হাজার টন টিএনটি। বোমা হামলার চার মাসে সেখানে প্রাণ হরান ৭০ হাজার মানুষ।
তৃতীয় হামলার আতঙ্ক : দুই শহরে বোমা হামলার পর জাপানিরা আতঙ্কে ছিলেন যে, রাজধানী টোকিওতে হয়তো তৃতীয় হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। তা হয়নি।
স্মরণের সংস্কৃতি : ১৯৫৫ সালে নাগাসাকিতে অ্যাটোমিক বোমার জাদুঘর এবং একটি ‘পিস পার্ক’ বা শান্তি উদ্যান নির্মাণ করা হয়। সেখানে গিয়ে অনেকেই বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণ করেন। এটা জাপানিদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পারমাণবিক যুদ্ধের নারকীয়তার বৈশ্বিক প্রতীকে পরিণত হয়েছে হিরোশিমা ও নাগাসাকি।