সোমবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

অভিযানের প্রস্তুতি শেষ করে এনেছে রাশিয়া

মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা

অভিযানের প্রস্তুতি শেষ করে এনেছে রাশিয়া

রাশিয়ার ভয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেন। তাতে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের। এ জন্য ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষকে কাঠের তৈরি ডামি রাইফেলে গুলি চালানো শেখাচ্ছে -এএফপি

মার্কিন ভয় কি সত্যিই হতে চলছে। ইউক্রেনে হামলার পুরো আয়োজন প্রায় শেষ করে আনছে। ইউক্রেনে একটি পূর্ণমাত্রার অভিযান চালাতে যে ধরনের সামরিক সক্ষমতা দরকার, রাশিয়া তার প্রায় ৭০ শতাংশ এখন জড়ো করে ফেলেছে। এই দাবি করছে মার্কিন কর্মকর্তারা। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মাটিতে বরফ জমে গিয়ে তা শক্ত হয়ে যাবে এবং এর ফলে মস্কোর পক্ষে ভারী সামরিক যান নিয়ে আসা সহজ হবে, বলছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা। ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে রাশিয়া এক লাখের বেশি সৈন্য এনে জড়ো করেছে। তবে ইউক্রেনে কোনো আক্রমণের পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করছে রাশিয়া। মার্কিন কর্মকর্তারা অবশ্য তাদের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করেননি। তারা কেবল বলছেন, গোয়েন্দা সূত্রে তারা এসব তথ্য পেয়েছেন, কিন্তু বিষয়টির স্পর্শকাতরতার কারণে এর বেশি কিছু তারা জানাতে নারাজ। মার্কিন গণমাধ্যমকে এই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এ রকম একটি পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না, সেটা তারা জানেন না, তবে এই সংকটের কূটনৈতিক সমাধান এখনো সম্ভব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু করে মার্চের শেষ পর্যন্ত যে ধরনের আবহাওয়া থাকবে তা রাশিয়াকে ভারী সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনের জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ দেবে। এই কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাশিয়ার এই অভিযানের কারণে ৫০ হাজার পর্যন্ত বেসামরিক মানুষ মারা যেতে পারে। তারা আরও অনুমান করছেন, এ রকম একটি রুশ আক্রমণের মুখে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পতন ঘটবে কয়েকদিনের মধ্যেই। এর ফলে ইউরোপে এক বিরাট শরণার্থী সংকট দেখা দেবে, কারণ লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাবে। এদিকে ন্যাটোর শক্তি বাড়ানোর জন্য পোল্যান্ডে আরও মার্কিন সেনা দল এসে পৌঁছাতে শুরু করেছে। এদের প্রথম দলটি গতকাল পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বে রজেসজো শহরে এসে অবতরণ করে।

মস্কো দাবি করছে তাদের সেনা দলকে ওই অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণের জন্য। তবে ইউক্রেন এবং এর পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর আশঙ্কা, ক্রেমলিন হয়তো কোনো একটি আক্রমণের পরিকল্পনা করছে। রাশিয়া আট বছর আগে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করে নেওয়ার পর এবং পূর্বদিকের ডনবাস অঞ্চলের বিদ্রোহীদের রক্তাক্ত বিদ্রোহে সমর্থন দেওয়ার পর নতুন করে এই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মস্কো ইউক্রেনের সরকারের বিরুদ্ধে মিনস্ক চুক্তি মেনে না চলার অভিযোগ তুলেছে। পূর্ব ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এই চুক্তি হয়েছিল। পূর্ব ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকা রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণ করে। সেখানে ২০১৪ সালের পর থেকে যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। রাশিয়া দাবি জানাচ্ছে, ইউক্রেনকে যেন ন্যাটো জোটে নেওয়া না হয়। রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে সেই স্নায়ুযুদ্ধের সময় হতে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র আছে এই দুটি দেশের হাতেই। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ইউক্রেন ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ। বিবিসি

সর্বশেষ খবর