সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

আকাশগঙ্গার থেকেও ১৬০ গুণ বড় ছায়াপথ

আকাশগঙ্গার থেকেও  ১৬০ গুণ বড় ছায়াপথ

আমাদের পৃথিবী যে ছায়াপথের সদস্য তার নাম আকাশগঙ্গা। এই আকাশগঙ্গার হাজার কোটি গ্রহ ও নক্ষত্রের অবস্থান। সেই সদস্যদের কিছুর নাম আমরা জানি, যেমন সূর্য, চাঁদ গ্রহের মধ্যে বুধ, শুক্র, বৃহস্পতি, ইউরেনাস, নেপচুন প্রভৃতি। বিজ্ঞানীরা এবার আমাদের আকাশগঙ্গার চেয়ে এটির ব্যাস ১৬০ গুণ বেশি! ছায়াপথের প্রস্থের পরিমাপ ১ কোটি ৬৩ লাখ আলোকবর্ষ! বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনো পর্যন্ত ছায়াপথের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড়। কীভাবে এই ছায়াপথের আয়তন এত বিরাট হলো, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। সদ্য খুঁজে পাওয়া এই ছায়াপথটির নাম ‘অ্যালসিওনিয়াস’। বিজ্ঞানীদের হিসাব বলছে, এর প্রস্থের পরিমাপ ১ কোটি ৬৩ লাখ আলোকবর্ষ! এর আগে যে বৃহত্তম ছায়াপথের (আইসি ১১০১) সঙ্গে মানুষের পরিচয় হয়েছিল, এটি তার থেকেও চারগুণ বড়। সেই ছায়াপথের বিস্তার ছিল ৩৯ লাখ আলোকবর্ষ। নতুন ছায়াপথের এই ব্যাপ্তি দেখেই তার নামকরণ করা হয়েছে ‘অ্যালসিওনিয়াস’। গ্রিক পুরাণ অনুসারে, ‘অ্যালসিওনিয়াস’ আদতে এক বিশাল দৈত্য। যার লড়াই হয়েছিল হারকিউলিসের সঙ্গে। পৃথিবী থেকে ‘অ্যালসিওনিয়াস’-এর দূরত্ব প্রায় ৩০০ কোটি আলোকবর্ষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দৈত্যাকৃতির এই ছায়াপথ আদতে রেডিও গ্যালাক্সির আদর্শ উদাহরণ। এর কেন্দ্রে রয়েছে বিশাল, বিরাট একটি কৃষ্ণগহ্বর। তার চারপাশে যা কিছু রয়েছে, সবকিছুকেই সেই ব্ল্যাক হোল গিলে খাচ্ছে! এখনো পর্যন্ত মানুষের আবিষ্কার করা ছায়াপথের মধ্যে এটিই সর্ববৃহৎ।  জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের যে জিনিসটা সব থেকে বেশি ভাবাচ্ছে, তা হলো এর আয়তন। সত্যি বলতে কী, প্লাজমায় পরিপূর্ণ এই ধরনের বিরাট রেডিয়ো গ্যালাক্সির অবস্থান তাঁদের কাছে নতুন কিছু নয়। কিন্তু, ‘অ্যালসিওনিয়াস’-এর গঠন লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এর কেন্দ্রস্থল তুলনামূলক সাধারণ। সেক্ষেত্রে কোন পদ্ধতিতে এর এমন বিস্তার ঘটল, তা বুঝতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা।

গবেষকরা প্রথমেই অত্যন্ত ভারী ছায়াপথের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পান। এরপর শুরু হয় তথ্যভান্ডার তৈরির কাজ। ইউরোপের মোট ৫২টি কেন্দ্র থেকে প্রায় ২০ হাজার রেডিয়ো টেলিস্কোপের একটি সঙ্গবদ্ধ নেটওয়ার্ক এই কাজে ব্যবহার করা হয়। সেই তথ্যভান্ডার বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, তাঁরা আসলে একটি নির্দিষ্ট ছায়াপথ নিয়েই এতদিন তথ্য সংগ্রহ করেছেন!

সর্বশেষ খবর