লেজার অস্ত্র প্রযুক্তির সাহায্যে এক প্রকার লেজার বিম তৈরি করে, এটি লক্ষ্যবস্তুকে একেবারে পুড়িয়ে ফেলা যায় বা দ্বিখন্ডিত করা যায়। এই লেজার রশ্মির গতি আলোর গতির সমান এবং গতানুগতিক নিক্ষেপণীয় অস্ত্রের চাইতে আক্রমণের পরিধিও বড়।
সম্প্রতি একটি সরকারি গণমাধ্যমে প্রচারিত অধিবেশনে রাশিয়ার ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইউরি বরিসভ জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে লেজার অস্ত্রের মতো শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করছে রাশিয়া। তিনি জানান, ‘জাদিরা’ নামের এই অস্ত্রটি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেনের ড্রোন ধ্বংস করতে তারা অত্যাধুনিক লেজার অস্ত্র ব্যবহার করছে। তবে আমেরিকা এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
রাশিয়ার ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইউরি বরিসভ দাবি করেছেন, ওই অস্ত্রের সাহায্যে তারা ইউক্রেনের ড্রোন ধ্বংস করেছে। উপগ্রহের ক্যামেরা ঢেকে দিয়ে লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে পারে তাদের এই আধুনিক অস্ত্র। ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, জাদিরা তাদের ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালাস্টিক মিসাইল সিস্টেমের একটি অংশ। যার মধ্যে একটি লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যাকে বলা হয় পেরেসভেট। এই অস্ত্রের সাহায্যে দেড় হাজার কিলোমিটার দূরের স্যাটেলাইটের ছবি ব্লক করে দেওয়া যায়।
অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, লেজার অস্ত্রের সাহায্যে খুব সহজে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা যায়। খুব জোরালো লেজার বিমের সাহায্যে লক্ষ্যবস্তুতে ফুটো তৈরি করে দেওয়া যায়। তবে আধুনিক লেজার অস্ত্রের সাহায্যে আরও বড় আক্রমণ সম্ভব। লক্ষ্যবস্তুকে সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। আরও সুবিধা হলো, লেজার অস্ত্র তৈরির জন্য কোনোরকম গোলাবারুদের প্রয়োজন হয় না। অত্যন্ত কম খরচে এই অস্ত্র তৈরি সম্ভব। কিছুদিন আগে ইসরায়েল দাবি করেছিল, তারা পৃথিবীর প্রথম লেজার অস্ত্র তৈরি করতে পেরেছে। আমেরিকাও লেজার অস্ত্র তৈরির দাবি করেছে।
তবে রাশিয়া এমন অস্ত্র তৈরি করেছে কি না, তা নিয়ে কারও কাছে কোনো খবর ছিল না। রাশিয়া এর আগে এমন দাবিও করেনি। তবে পেন্টাগনের অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইউক্রেনে রাশিয়া যে ধরনের হামলা চালিয়েছে, তাতে এখনো পর্যন্ত লেজার অস্ত্র ব্যবহারের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ফলে রাশিয়ার দাবি মিথ্যা বলেই মনে হচ্ছে। এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, একসময় নাৎসিরা এভাবে প্রোপাগান্ডা চালাত। ভুয়া অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তারা বিপক্ষের মনোভাব ভাঙার চেষ্টা করত। রাশিয়া ঠিক সে কাজটিই করছে এখন।