বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

কত জ্বালানি তেল আছে মার্কিন রিজার্ভে?

কত জ্বালানি তেল আছে মার্কিন রিজার্ভে?

বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের সংকট মেটাতে মার্কিন কৌশলগত জাংরি তেলের রিজার্ভ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে আমেরিকার এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। রিয়াদ বলেছে, তেলের বাজারে ‘কারসাজি করতে’ এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, টেক্সাস ও লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে মাটির নিচে লবণের স্তরের ভিতর তৈরি গুহায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো জরুরি প্রয়োজন সামাল দেওয়ার জন্য জমা করে রাখা আছে বিপুল পরিমাণ তেল। যুক্তরাষ্ট্রে মোট চারটি জায়গায় এই জরুরি তেলের মজুদ রয়েছে। টেক্সাসের ফ্রিপোর্ট এবং উইনির কাছে, আর লুইজিয়ানার লেক চার্লস আর ব্যাটন রুজে। মাটির ৩ হাজার ৩০০ ফুট নিচে মানবসৃষ্ট অনেক গুহার মধ্যে এই তেল জমা করে রাখা আছে।

ভূগর্ভস্থ লবণের স্তরের একটা অংশের লবণ গলিয়ে ফেলে তৈরি করা হয় এই গুহা- যাতে প্রাকৃতিক গ্যাস বা তেল মজুদ রাখা যায়। মাটির ওপরে ট্যাংকে তেল জমা রাখার চাইতে এই পদ্ধতি অনেক সস্তা ও নিরাপদ। ভূগর্ভস্থ’ লবণের রাসায়নিক গঠন এবং ভূতাত্ত্বিক চাপ- দুই কারণেই এখান থেকে তেল বেরিয়ে যেতে পারে না। ফ্রিপোর্টের কাছে ব্রায়ান মাউন্ডে যে গুহাটি আছে তাদের ২৫৪ মিলিয়ন বা ২৫ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল তেল জমা রাখা যায়। আন্তর্জাতিক জ্বালানি এজেন্সির সব সদস্য দেশকেই অন্তত ৯০ দিন ব্যবহারের মতো পেট্রোলিয়ামের আমদানি ধরে রাখতে হয়। তবে জরুরি প্রয়োজন মোকাবিলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ভান্ডার গড়ে তুলেছে- তার মতো বড় মজুদ পৃথিবীর আর কোথাও নেই।

চলতি বছরের মার্চে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ‘রয়টার্স’ জানিয়েছে, তখন আমেরিকার ওই ভান্ডারে মজুদ ছিল ৫৮৬ মিলিয়ন ব্যারেল তেল। স্ট্যাটিস্টার তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের চলতি অক্টোবরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক জ্বালানি ব্যবহারের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮.৭ মিলিয়ন ব্যারেল। সে হিসেবে বর্তমানে যা মজুদ আছে তা দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনায়াসে ৬৭ দিন চলতে পারবে। বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১১ সালে জরুরি মজুদের তেল ব্যবহার করা হয়েছিল, যখন আরব বসন্তের কারণে জ্বালানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।

 ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়র জরুরি মজুতের তেল ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন। তার ছেলে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ হারিকেন ক্যাটরিনার পর জরুরি মজুদের ১ কোটি ১০ লাখ ব্যারেল তেল বিক্রির অনুমতি দেন। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময়ও বাজেট ঘাটতি কাটাতে ১৯৯৭ সালে ২ কোটি ৮০ লাখ ব্যারেল তেল বিক্রি করা হয়। অনেকে অবশ্য এত বড় জরুরি মজুদ রাখার আদৌ প্রয়োজন আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৭ সালে জরুরি মজুদের অর্ধেক তেলই বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন ফেডারেল ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, স্ট্যাটিস্টা

সর্বশেষ খবর