বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

কুর্দি তরুণীর মৃত্যু নিয়ে ইরানে বিক্ষোভ

পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। রক্তক্ষয়ী দমন-নিপীড়ন উপেক্ষা করে ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। মাসা আমিনির মৃত্যুর ৪০ দিন পূর্তিতে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে উত্তেজনার মধ্যেই এই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। একটি ভিডিওতে আহভাজের শহীদ চামরান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের স্লোগান দিতে শোনা যায়- ‘একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হতে পারে কিন্তু অবমাননা মেনে নেব না।’ গত মাসে মাসা আমিনির মৃত্যুর পর শুরু হওয়া বিক্ষোভে সামনের সারিতে রয়েছেন নারী ও স্কুলছাত্রীরা। নারীদের প্রচলিত কঠোর পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মাসা আমিনিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। হেফাজতে তার মৃত্যুর ঘটনায় ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

 নীতি পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার তিন দিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর মারা যান ২২ বছর বয়সী ওই কুর্দি তরুণী। তিনি ভাইয়ের সঙ্গে তেহরান গিয়েছিলেন। গতকাল মাসা আমিনির মৃত্যুর ৪০ দিন পূর্ণ হয়েছে। ইরানের প্রথা অনুযায়ী কারও মৃত্যুর পর ৪০তম দিনে শোক পালনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।

অ্যাকটিভিস্টরা বলেছেন, দিনটি উপলক্ষে মাসার পরিবারকে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধ করেছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। একই সঙ্গে আজ কুর্দিস্তান প্রদেশে মাসা আমিনির কবর জিয়ারতে না যেতেও লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনায় প্রকাশিত মাসা আমিনির পরিবারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং কোনো ধরনের দুর্ভাগ্যজনক সমস্যা এড়াতে আমরা ৪০তম দিন (চল্লিশা) পালনে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করব না।’

তবে অ্যাকটিভিস্টরা বলছেন, জোরপূর্বক এই বিবৃতি আদায় করা হয়েছে। এটা সত্ত্বেও মাসার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হতে পারে বলে তারা আশা করছেন।

অনলাইন ভিডিওতে মঙ্গলবার বেহেশতি ইউনিভার্সিটি ও খাজে নাসির তুসি ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ই তেহরানে অবস্থিত। পাশাপাশি খুজেস্তান প্রদেশের আহভাজের শহীদ চামরান ইউনিভার্সিটিতেও বিক্ষোভ হয়।

আগের দিন সোমবার নিরাপত্তা বাহিনী তেহরানের শহীদ সদর বালিকা কারিগরি স্কুলে ছাত্রীদের মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর নতুন করে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই? স্কুলের অধ্যক্ষ মুঠোফোন ব্যবহারের বিধিমালা মেনে চলার আহ্বান জানালে ছাত্রী ও অভিভাবকদের সঙ্গে বিরোধের জেরে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।

অসলোভিত্তিক সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) বলেছে, মাসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভে গতকাল নাগাদ ১৪১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের ২৯ জনই বয়সে শিশু ও কিশোর।

সর্বশেষ খবর