বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বাইডেনকে লেখা সেই চিঠি প্রত্যাহার

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ‘জোরালো’ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে লেখা চিঠি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা। কড়া সমালোচনা এবং মস্কোকে তুষ্ট করতে এ চিঠি লেখা হয়েছে এমন অভিযোগের মুখে কংগ্রেসের বাম ভাবধারার আইন প্রণেতারা তাদের চিঠিটি প্রত্যাহার করে নেন। কংগ্রেসের প্রগ্রেসিভ ককাসের চেয়ারপারসন ও ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা প্রমীলা জয়পাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, কয়েক মাস আগে এ চিঠির খসড়া তৈরি করা হয়েছিল।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে ‘ভালোভাবে যাচাই করা ছাড়াই’ দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মীরা সেটি প্রকাশ করেন।

জয়পাল বলেন, ‘কূটনীতির মধ্য দিয়ে সব যুদ্ধেরই অবসান হয়। ইউক্রেনের বিজয়ের পর এ ক্ষেত্রেও সেটিই হবে।’ প্রমীলা জয়পাল বলেন, ‘সোমবার পাঠানো চিঠিটি ইউক্রেনীয়দের নিজেদের জাতীয় সার্বভৌমত্বের ন্যায়সংগত প্রতিরক্ষার প্রতি সমর্থনে রিপাবলিকানদের যে বিরোধিতা, তার সঙ্গে মিলে যায়। ফলে এই সময়ে এটি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আমরা চিঠিটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’

গত সোমবার পাঠানো ওই চিঠির নেতৃত্বে ছিলেন কংগ্রেসের এই ডেমোক্র্যাট নারী আইনপ্রণেতা। এতে সই করেন প্রগতিশীল ৩০ আইনপ্রণেতা। চিঠিতে ‘ক্ষয়ক্ষতি কমাতে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনাসহ সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান অর্জনে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন দিতে বাইডেন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়’।

কিন্তু তাৎক্ষণিক ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টি- দুই দলের পক্ষ থেকেই চিঠির সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচকদের যুক্তি, এতে কিয়েভকে সমর্থনে ওয়াশিংটনে যে ঐকমত্য আছে, তা দুর্বল হয়েছে। একই সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি ইউক্রেনীয়দের নিজেদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার হোয়াইট হাউসের যে অবস্থান, তা থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন- প্রতিনিধি পরিষদের সুপরিচিত প্রগতিশীল আইনপ্রণেতা আয়না প্রেসলে, ইলহান ওমর, রাশিদা তালিব, আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ, রো খান্না ও বারবারা লি।

তবে এ চিঠির তিরস্কার করেছেন অনেক পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক, ডেমোক্রেটিক পার্টি-সংশ্লিষ্ট অনেক অ্যাকটিভিস্ট ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। পাশাপাশি কয়েকজন প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাট সহকর্মীও তাদের সমালোচনা করেছেন।

চিঠির প্রতিক্রিয়ায় ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রুবেন গ্যালেগো টুইটে লেখেন, ‘যুদ্ধ শেষ করার উপায় কী? দ্রুত জয়ী হওয়া। কীভাবে দ্রুত জেতা যাবে? রাশিয়াকে হারাতে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে।’

ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান সেথ মাল্টনও চিঠির নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কিয়েভের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হলে তা কেবলই রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে শক্তিশালী করবে।

সার্বভৌম দেশ হিসেবে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার শর্ত কেবল ইউক্রেনই ঠিক করবে, এ মন্তব্য করেন ডেমোক্র্যাট নারী আইনপ্রণেতা ইলেইন লুরিয়া। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সর্বশেষ আগ্রাসী সেনাটিকে বিতাড়নে লড়ছে ইউক্রেন। দেশটির জনগণের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার ও সহযোগিতার প্রতি আমার সমর্থন অব্যাহত থাকবে।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এর পর থেকে সামরিক ও মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের জন্য শত শত কোটি ডলার অনুমোদন দেয় মার্কিন কংগ্রেস। এসব বিল পাসে আইনপ্রণেতাদের বিপুল সমর্থন ছিল।

খবর আল-জাজিরার

সর্বশেষ খবর