তুরস্কের ইস্তাম্বুলে জঙ্গি হামলা হয়েছে। এ হামলায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিন বছরের এক শিশুও আছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮১ জন। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনকে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। এর মধ্যে একজন সিরীয় নারীও আছেন। তিনি এ ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন। খবর আলজাজিরা ও বিবিসির।
রবিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ২০ মিনিট নাগাদ শহরের ইস্তিকলাল এভিনিউয়ের তাকসিম স্কয়ার এলাকার একটি জনবহুল শপিং স্ট্রিটে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এ হামলা করা হয়। বিস্ফোরণের ঘটনায় কুর্দি জঙ্গিদের দায়ী করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু। দেশটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে বলেছেন, একজন নারী এ হামলার ঘটনায় জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। ইস্তাম্বুল পুলিশ বলেছে, এ হামলার প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে এক সিরীয় নারীকে আটক করেছে তারা। ওই নারীই ঘটনাস্থলে বোমাটি রেখে গিয়েছিলেন। পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী স্বীকার করেছেন তিনি সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আফরিন অঞ্চল দিয়ে তিনি তুরস্কে প্রবেশ করেন।
এর আগে তুরস্কের আইনমন্ত্রী বেকির বোজদাগ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ইস্তিকলাল এভিনিউতে বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগে ফুলের তোড়ার নিচে একটি ব্যাগ রেখে যান ওই নারী। এর পরপরই বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ওই এলাকা। বিস্ফোরণের আগে ওই নারী ৪০ মিনিটের বেশি সময় ধরে বসে ছিলেন। তিনি সেখান থেকে উঠে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মাথায় বিস্ফোরণ হয়। তুর্কি কর্তৃপক্ষ বলছে, তবে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সম্পৃক্ততার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা। সশস্ত্র গোষ্ঠী পিকেকে তুরস্কের ভিতরে স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র একে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।অতীতেও কুর্দি, ইসলামপন্থি এবং বামপন্থি জঙ্গিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে তুরস্ক। ২০১৬ সালে ইস্তাম্বুল ফুটবল স্টেডিয়ামের বাইরে জোড়া বোমা হামলায় ৩৮ জন নিহত এবং ১৫৫ জন আহত হওয়ার ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) একটি শাখা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোয়লু বলেন, ইস্তাম্বুলের ইস্তিকলাল এভিনিউতে হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উত্তর সিরিয়ার শহর কোবানিতে, যেখানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুর্কি বাহিনী সিরিয়ার কুর্দি ওয়াইপিজি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে। বোমারু উত্তর সিরিয়ার আফরিন অঞ্চল পার করে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি, হামলার নির্দেশ কোবানি থেকেই এসেছে।’ এদিকে, তুর্কি সরকার হামলার জন্য কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিকে দায়ী করলেও এখন পর্যন্ত বিস্ফোরণের দায় কেউ স্বীকার করেনি।