রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

চীনে লকডাউনের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ

চীনে লকডাউনের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭০ লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। গোটা পৃথিবী বিপর্যস্ত ছিল এ ভাইরাসে। তবে এখন সংক্রমণ কমে এলেও চীনে আবার ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসটি। তবে ভাইরাসের কারণে দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে জারি থাকা লকডাউনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন চীনের পশ্চিমাঞ্চলের শিনজিয়াং অঞ্চলের বাসিন্দারা। দেশটিতে নতুন করে করোনা ছড়িয়ে পড়ার মধ্যেই এ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটল।

গতকাল লকডাউন তুলে নেওয়ার দাবিতে শিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকির রাস্তায় মিছিল করছে শত শত মানুষ। তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে হ্যাজম্যাট স্যুট পরিহিত নিরাপত্তাকর্মীরা। চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, জাতীয় সংগীত গেয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন নাগরিকরা। এদের মধ্যে অনেকে লকডাউন থেকে মুক্ত হওয়ার দাবি জানান। চীনে সবচেয়ে লম্বা সময় ধরে লকডাউনে থাকা অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি শিনজিয়াং। সেখানে উরুমকি শহরের অনেকেই টানা ১০০ দিনেও বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি। গত দুই দিনে সেখানে প্রায় ২০০ এর বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার উরুমকির একটি বহুতল আবাসিক ভবনে আগুন লেগে ১০ জনের মৃত্যু হয়। আগুন লাগার পর ভবনের বাসিন্দারা নিচে নামতে পেরেছিলেন বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, ভবনটি আংশিক অবরুদ্ধ থাকায় সময়মতো বের হতে পারেননি অনেক মানুষ। এরপর গতকাল ভোরে তড়িঘড়ি করে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। করোনা বিধিনিষেধ ভবনের বাসিন্দাদের পালানোতে কোনো বাধার সৃষ্টি করেনি বলে দাবি করেন তারা। অগ্নিনিরাপত্তা ভালোভাবে বুঝলে তারা সময়মতো বের হতে পারতেন বলে মন্তব্য করেন এক কর্মকর্তা। শিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুর সম্প্রদায়ের প্রায় ১ কোটি মানুষ বাস করেন। তাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ করার অভিযোগ রয়েছে চীনের সরকারের বিরুদ্ধে।

ফের দৈনিক শনাক্তের রেকর্ড : চীনে টানা তৃতীয় দিনের মতো দৈনিক কভিড-১৯ রোগী শনাক্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গতকাল দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানায়, শুক্রবার চীনে ৩৫  হাজার ১৮৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন বৃহস্পতিবার ৩২ হাজার ৬৯৫ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। তার আগের দিন বুধবার ৩১ হাজার ৪৪৪ জনের দেহে অত্যন্ত সংক্রামক এ ভাইরাসটি শনাক্ত     হয়েছিল। শুক্রবার যাদের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তাদের ৩৪৭৪ জনের মধ্যে রোগের উপসর্গ আছে কিন্তু বাকি ৩১৭০৯ জন উপসর্গহীন। চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমিতদের এ দুই ক্যাটাগরিতে হিসাব করা হয়। শুক্রবার বিদেশ থেকে আগত সংক্রমিতদের বাদ দিয়ে স্থানীয়ভাবে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৪৯০৯ জন। বিবিসি

এদের মধ্যে ৩৪০৫ জনের রোগ লক্ষণ আছে আর বাকিরা উপসর্গহীন। কভিড-১৯ প্রথমে প্রাদুর্ভাব হিসেবে শুরু হলেও পরে মহামারি হয়ে ওঠা রোগটিতে শুক্রবার পর্যন্ত চীনে মৃতের সংখ্যা ৫২৩২ জন ছিল। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দেশটির মহানগরীগুলো সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গুয়াংজু এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের চংশিংয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। ৩ কোটি ২০ লাখ বাসিন্দার শহর চংশিংয়ে শুক্রবার স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত ৭৭২১ জন শনাক্ত হয়; এ সংখ্যা পূর্ববর্তী দিনের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি।

সর্বশেষ খবর