মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ওয়াগনারের সদর দফতরে ইউক্রেনের হামলা

রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদের গোষ্ঠীটির নাম ওয়াগনার গ্রুপ

রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করা ওয়াগনার মার্সেনারিদের একটি সদর দফতরে ইউক্রেনের সেনারা হামলা চালিয়েছে। লুহানস্কের নির্বাসিত গভর্নর সেরহি হাইডাই বলেছেন, লুহানস্কের কাদিভকায় যে হোটেলে ওই ভাড়াটে সেনারা অবস্থান করছিল, সেখানে হামলায় বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে হোটেলটিতে ওয়াগনারের সেনারা ছিল কি না, তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে সক্ষম হয়নি বিবিসি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এতে ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদের গোষ্ঠীটির নাম ওয়াগনার গ্রুপ। ওয়াগনার গ্রুপকে প্রথম চিহ্নিত করা হয়েছিল ২০১৪ সালে ইউক্রেনে। সেখানে তারা পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দিচ্ছিল। তবে এর বাইরে সিরিয়া, মোজাম্বিক, সুদান ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকেও তারা বিভিন্ন তৎপরতায় জড়িত। একসময়ের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী এবং ভ্লাদিমির পুতিনের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইয়েভগেনি প্রিগোজিন এ বাহিনীটি তৈরি করেছেন। এদের বিরুদ্ধে একাধিকবার যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রতি ক্রেমলিনের হয়ে কাজ করছে এ ভাড়াটে গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা। রবিবার হামলার বিষয়ে সাবেক গভর্নর হাইদাই জানান, রাশিয়ার ‘উল্লেখযোগ্য ক্ষতি’ হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার অভাবে মারা যাবে ৫০ শতাংশ। তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিয়েভের পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানানো হয়নি। কতজন নিহত হয়েছেন তা নিশ্চিত করেননি হাইদাই।

এদিকে চলতি সপ্তাহে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে দুই দেশের যোদ্ধাদের জোরালো লড়াই চলছে। এর মধ্যে রবিবার ইউক্রেনের ওডেসা এবং দখলকৃত শহর মেলিটোপোলের একাধিক স্থানকে টার্গেট করে বোমাবর্ষণ করেছে রাশিয়া। রুশ বাহিনীর স্থানেও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন।

অন্যদিকে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। অন্যদিকে রাশিয়ার দখলে থাকা মারিওপোলের মস্কোপন্থি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইউক্রেনের একটি মিসাইল হামলায় দুজন নিহত আর অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তারা যে ছবি প্রকাশ করেছেন, তাতে বড় ধরনের একটি আগুন জ্বলতে দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা হিমার্স রকেট লঞ্চার দিয়ে ওই হামলা করা হয়েছে বলে তাদের দাবি। ইউক্রেনের পাল্টা হামলায় বড় ভূমিকা রাখছে এ অস্ত্র। মার্চের শুরু থেকেই মারিওপোল রাশিয়ার দখলে রয়েছে যা তাদের সেনাবাহিনীর সরঞ্জাম সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির একজন উপদেষ্টা ওলেস্কি আরেস্তোভিচ ইঙ্গিত দিয়েছেন, মারিওপোল পুনর্দখল করা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর অন্যতম প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘মারিওপোলের পতন হলে খেরসনে (রাশিয়ার) পুরো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।’

সেটা ঘটলে ‘ক্রিমিয়ার দিকে একটি সরাসরি রুট পেয়ে যাবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী,’ বলেন তিনি। ২০১৪ সাল ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করে নিয়েছিল রাশিয়া, যা পুনরুদ্ধার করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে ইউক্রেন।

সর্বশেষ খবর