শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার পথে ত্রাণের প্রথম বহর

বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার পথে ত্রাণের প্রথম বহর

তুরস্কের হ্যাতায়ে ভূমিকম্পের দুই দিন পর ধ্বংসস্তুপ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয় এক ব্যক্তিকে -এএফপি

ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর তিন দিন পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও নানা জটিলতায় সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ত্রাণ পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে চতুর্থ দিন ত্রাণের প্রথম বহর সিরিয়ায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। তারা জানান, তুরস্ক থেকে ত্রাণ নিয়ে ছয়টি লরি ইদলিবের বাব আল-হওয়া সীমান্ত অতিক্রম করেছে। গত সোমবার ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্ক এবং প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। দুই দেশ মিলিয়ে গতকাল পর্যন্ত মৃত্যু ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলেই অন্তত ১ হাজার ৯০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা দাতব্য সংস্থার কর্মীরা। তারা বলেন, এখনো শত শত পরিবার ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। যতই সময় গড়াচ্ছে, প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া পরিবারগুলোকে উদ্ধার করার আশা ততই স্তিমিত হয়ে আসছে। এমনকি যারা নিজের চেষ্টায় বের হয়ে আসতে পেরেছেন, তাদেরও বেঁচে থাকতে লড়াই করতে হচ্ছে।

সিরিয়ার ভূমিকম্প দুর্গত এলাকার কিছু অংশ দেশটির সরকারি বাহিনীর দখলে। কিছু অংশ বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে হওয়ায় সেখানে আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষে উদ্ধারকারী বাহিনী ও ত্রাণ পাঠানো বেশ জটিল।

অলৌকিক ঘটনার আশায় তুরস্ক-সিরিয়ার মানুষ : বুধবার তুরস্কের ইস্কেন্দেরুন শহরের একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ চালানোর সময় একপর্যায়ে উপস্থিতদের নীরব থাকার অনুরোধ করেন উদ্ধারকারীরা। সেসময় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আসা শব্দ থেকে তারা ধারণা করেন যে সেখানে জীবিত মানুষ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই ভবনে বসবাসকারী পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীরা উদ্ধারকাজ দেখতে আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষও কিছুক্ষণের জন্য কথা বলা বন্ধ করে দেন। আশপাশের ক্রেন ও উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত অন্যান্য যন্ত্রপাতি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিছু মুহূর্তের নীরবতার পর উদ্ধারকারী দলের কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্স ডাকার আহ্বান জানান। তারা জানান, যে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক নারীকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। উদ্ধারকারীদের কাছ থেকে এ ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত জনতা আনন্দে হর্ষধ্বনি করে ওঠে। অনেকেই চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি।

এ ঘটনার পর স্বজনের খোঁজ না পাওয়া অনেকের মধ্যেই নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। অনেকেই বলছেন যে তাদের পরিচিতদের জীবিত উদ্ধার করা যাবে- এমন আশা ফিরে পেয়েছেন তারা। এক নারীর ভাষ্যে, তিনি ‘অলৌকিক’ কিছুর জন্য অপেক্ষা করছেন।

সর্বশেষ খবর