রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি রাশিয়া, ক্ষুব্ধ ইউক্রেন

১৫ সদস্যের প্রত্যেকেই এক মাসের জন্য পর্যায়ক্রমে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি রাশিয়া, ক্ষুব্ধ ইউক্রেন

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নিয়েছে রাশিয়া। সদস্য দেশগুলোকে এ প্রক্রিয়া আটকানোর আহ্বান জানিয়েছিল ইউক্রেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তারা। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের প্রত্যেকেই এক মাসের জন্য পর্যায়ক্রমে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে।

এর আগে রাশিয়া শেষবার ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিল, ওই মাসেই তারা প্রতিবেশী ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করেছিল। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি এমন একটি দেশ হলো যে দেশটির প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কথিত যুদ্ধাপরাধের দায়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে রেখেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আইসিসি গত মাসে ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করে। তবে এই আদালত জাতিসংঘের কোনো অঙ্গ প্রতিষ্ঠান নয়। ইউক্রেনের অভিযোগ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার প্রক্রিয়ায় বাধা দেবে না। রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র। পরিষদের অন্য স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলো হলো যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও চীন। নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির ভূমিকা পদ্ধতিগত হলেও জাতিসংঘে নিযুক্ত মস্কোর রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নিবেনজিয়া রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, এ সময়টিতে তিনি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিতর্ক তদারকির পরিকল্পনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি ‘এক মেরু বিশ্বব্যবস্থায় বদল’ আনতে যাওয়া ‘নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা’ নিয়ে আলোচনা করবেন। পাঁচটি রাষ্ট্র স্থায়ীভাবে নিরাপত্তা পরিষদে প্রতিনিধিত্ব করে। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বৈশ্বিক ক্ষমতা কাঠামোর প্রতিফলন যা নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করার সময় প্রভাব ফেলেছিল। এই স্থায়ী সদস্যরা পরিষদের ১০টি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ভাষ্য, বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের রাশিয়ার পরিকল্পনা প্রমাণ করে যে, ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের আলোচনা পুরোপুরি ভেস্তে গেছে। পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনে পুতিনের ঘোষণার বিষয়ে ৩১ মাচ বোচায় সফরে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন জেলেনস্কি।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। তিন দিনের মস্কো সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলাপ করেন শি। দুই নেতার মধ্যে একাধিক বৈঠক হলেও মস্কো-কিয়েভ সংঘাত বন্ধে কোনো অর্থবহ অগ্রগতি অর্জন হয়নি। রুশ বাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত বুচা শহর সফরের সময় সাংবাদিকদের জেলেনস্কি বলেন, বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা প্রমাণ করে, চীনের সঙ্গে বৈঠক ব্যর্থ। আলোচনা পুরোপুরি ব্যর্থ।

পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনার পরও প্রতিবেশী বেলারুশে ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন থেকে পিছু হটবে না রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেলারুশে অস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দেওয়ার পর পশ্চিমারা সমালোচনা করে আসছেন। গত (২২ মার্চ) শনিবার পুতিন বলেছিলেন, পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধি না করার আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন না করে বেলারুশে এই কৌশলগত অস্ত্র মোতায়েন করা হবে। এটি অস্বাভাবিক কিছু না। কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র কী? যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুসেনা ও অস্ত্র ধ্বংস করার জন্য কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর পাল্লা কম এবং পারমাণবিক ওয়ারহেডের তুলনায় কম শক্তিশালী। পারমাণবিক ওয়ারহেডযুক্ত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পুরো একটি শহর ধ্বংস করতে সক্ষম। সিএনএন

সর্বশেষ খবর