শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
গোপন নথি ফাঁস

রুশপন্থি সন্দেহে জাতিসংঘ প্রধানের ওপরও নজরদারি যুক্তরাষ্ট্রের

রুশপন্থি সন্দেহে জাতিসংঘ প্রধানের ওপরও নজরদারি যুক্তরাষ্ট্রের

অ্যান্তোনিও গুতেরেস

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রাশিয়ার স্বার্থ মেটাতে খুবই আগ্রহী ছিলেন বলে বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি গুতেরেসের ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণও চালিয়েছে ওয়াশিংটন। সম্প্রতি অনলাইনে ফাঁস হওয়া কয়েকটি মার্কিন গোপন নথি থেকে এমন সব তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বেশ কয়েকটি নথিতে গুতেরেস ও তাঁর সহকারীর একান্ত ব্যক্তিগত কথোপকথনেরও বর্ণনা রয়েছে। গুতেরেস যে ওয়াশিংটনের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে, নথিগুলো তা-ই প্রমাণ করে।

ফাঁস হওয়া এ রকম একটি দলিলে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছরের জুলাই মাসে কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য আমদানি-রপ্তানির ব্যাপারে যে সমঝোতা হয়েছিল তার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকটের আশঙ্কার পর রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এই রিপোর্ট বলছে, গুতেরেস চুক্তিটি রক্ষার ব্যাপারে এতটাই আগ্রহী ছিলেন যে তিনি রাশিয়ার স্বার্থের কথা বিবেচনা করতেও রাজি ছিলেন। ‘রাশিয়া কিংবা ব্যক্তিবর্গের ওপর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গুতেরেস রাশিয়ার রপ্তানি করার সক্ষমতা আরও উন্নত করার ওপর জোর দিয়েছেন,’ বলছে রিপোর্ট। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর কর্মকান্ডের কারণে ‘ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য মস্কোকে জবাবদিহি করানোর চেষ্টা সফল হয়নি।’

এদিকে গুতেরেস ও তাঁর কর্মকান্ডের ওপর এমন নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালানোয় স্বভাবতই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের অধিকাংশ কর্মকর্তা। বিবিসির প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, মধ্য ফ্রেব্রুয়ারির আরেক নথিতে গুতেরেস ও তাঁর সহকারী আমিনা মোহাম্মদের খোলামেলা কথাবার্তার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। ওই কথোপকথন চলাকালে ইউক্রেনের জন্য ইউরোপকে আরও বেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছিলেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন। তাতে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। নথিতে আফ্রিকান নেতাদের তখনকার এক সম্মেলন নিয়ে গুতেরেসের সঙ্গে আমিনা মোহাম্মদের কথোপকথনও স্থান পেয়েছে। আমিনা সেখানে বলছেন, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বর্বর ও আমি তাঁকে বিশ্বাস করি না।

জাতিসংঘের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে নিয়মিত নজরদারি চালায়, তা প্রায় সবারই জানা। কিন্তু বিষয়টি যখন প্রকাশ্যে চলে আসে, তখন তা বিব্রতকর হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া গুতেরেসের মতো অন্যতম শীর্ষ কূটনীতিকের ওপর এমন পর্যবেক্ষণ বিশ্বের জন্য সম্ভাব্য ক্ষতিও ডেকে আনতে পারে বলে মত অনেকের।

সর্বশেষ খবর