সোমবার, ২২ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

৯১ শতাংশ শিশুর অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী বায়ুদূষণ

শিশুদের ওজন কমছে ১৫.৬ শতাংশ। অকাল জন্মের হার ৩৫.৭ শতাংশ

ইউরোপীয় পরিবেশ সংস্থা প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ইউরোপে প্রতি বছর ১ হাজার ২০০-এর বেশি শিশু এবং তরুণদের মৃত্যুর জন্য দায়ী বায়ুদূষণ। এটি পরবর্তী জীবনে রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করছে। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাড়ছে তাপ, ঝড়, বন্যা, খরা, দাবানল ও বায়ুদূষণের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাও। যার প্রভাব পড়ছে নবজাতকদের ওপর। উচ্চ আয়ের দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনে সবে থেকে অবদান রাখে। কিন্তু যারা এ সংকটে সব থেকে কম অবদান রাখে, তারাই সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বায়ুদূষণের কারণে ৯১ শতাংশ শিশুর অকাল মৃত্যু হয় নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে। সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি রিপোর্টে তেমনই দাবি করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে করা গবেষণা প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের অগণিত প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়ই গর্ভধারণের ফলে মৃত প্রসব, অকাল প্রসব এবং গর্ভকালীন বয়সের জন্য ছোট।

গবেষণায় বলা হয়, বায়ুদূষণের কারণে পানি ও খাদ্য বিষক্রিয়া গর্ভাবস্থাকে প্রভাবিত করে। প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশেষভাবে ঝুঁকি কমাতে ও জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় নীতি ও কর্মসূচিতে নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আরও বিনিয়োগের প্রয়োজন। বায়ুদূষণে প্রতি বছর ৬০ লাখ শিশুর জন্ম সময়ের আগেই হয়ে যায় বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রসবকালীন সময় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে বায়ুদূষণের জন্য হাঁপানিতে আক্রান্ত মহিলাদের এ ঝুঁকি ৫২ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। চরম তাপের কারণ ১৬ শতাংশ ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যদিও জলবায়ুর প্রভাব বিশ্বের সব ক্ষেত্রেই অনুভূত হচ্ছে। তবে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যারা, তারাই এ সংকটের জন্য সব থেকে কম দায়ী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে শিশুদের ওজন কমছে ১৫.৬ শতাংশ। অকাল জন্মের হার ৩৫.৭ শতাংশ- যার অধিকাংশই নিম্ন আয়ের দেশে দেখা যায়। গাম্বিয়ার ৯২ জন মহিলার ওপর একটি সমীক্ষা করেছিল। তাতে দেখা গেছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে স্টেনের ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি হচ্ছে। যা ভ্রƒণের হৃদস্পন্দন বৃদ্ধির জন্য দায়ী, নাভির মাধ্যমে রক্ত প্রবাহকে ধীর করে দেয়। অন্য একটি গবেষণায় ভারতের জেলা পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যের মধ্যে একটি ম্যাক্রো-লেভেল অ্যাসোসিয়েশনে দেখানো হয়েছে। ‘জলবায়ু পরিবর্তন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয় পথের মাধ্যমে নারীদের গর্ভাবস্থাকে প্রভাবিত করে। সাধারণ প্রত্যক্ষ পথের মধ্যে রয়েছে তাপ এক্সপোজার, ঝড়, বন্যা, খরা, দাবানল এবং বায়ুদূষণ।’

সর্বশেষ খবর