রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিমান দুর্ঘটনার ৪০ দিন পর চার শিশু জীবিত উদ্ধার

বিমান দুর্ঘটনার ৪০ দিন পর চার শিশু জীবিত উদ্ধার

বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ চার আদিবাসী শিশুকে ৪০ দিন পর কলম্বিয়ার অ্যামাজন জঙ্গল থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। সামরিক বাহিনীর সদস্য, দমকলকর্মী ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা কাকেতা প্রদেশের জঙ্গল থেকে এ চার শিশুকে উদ্ধার করেছেন। শুক্রবার পেত্রো এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এই শিশুরা যে সেসনা ২০৬ উড়োজাহাজের আরোহী ছিল, সেটি ১ মে ভোরের আগে বিধ্বস্ত হয়েছিল। বিধ্বস্ত হওয়ার সময় তাতে সাত আরোহী ছিলেন। বিমানটি কলম্বিয়ার অ্যামাজোনাস প্রদেশের আরারাকুয়ারা থেকে গুয়াভিয়ারে প্রদেশের সান হোসে দেল গুয়াভিয়ারে শহরে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় বিপৎসংকেত পাঠানোর পরপরই সেটি অ্যামাজন জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়। এতে ওই শিশুদের মা, পাইলটসহ তিনজন নিহত হন, এদের প্রত্যেকেই পূর্ণবয়স্ক। ‘সেনাবাহিনীর দুঃসাধ্য অভিযানে আমরা গুয়াভিয়ারে বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ চার শিশুকে জীবিত পেয়েছি। এটা সারা দেশের জন্য আনন্দ সংবাদ,’ টুইটারের মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় বলেছেন পেত্রো। ১ মে’র ওই দুর্ঘটনায় শিশুদের নিহত মা ও বিমানটির দুই পাইলটের মৃতদেহ বিমানটির ভিতরেই মেলে। কিন্তু বেঁচে যাওয়া ১৩, ৯, ৪ বছর ও ১১ মাস বয়সী চারটি শিশুকে তখন খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ শিশুরা বিধ্বস্ত বিমানটি থেকে বেরিয়ে সাহায্যের আশায় জঙ্গলের ভিতর ঢুকে পড়েছে, এমন ধারণা করেছিল উদ্ধার কার্যক্রম সমন্বয় করা কলম্বিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। কারণ এ শিশুরা অ্যামাজন অঞ্চলের যে আদিবাসী হুইতোতো সম্প্রদায়ের সদস্য, এরা প্রত্যন্ত জঙ্গলের সঙ্গে মানিয়ে জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত। তাদের শিকার, মাছ ধরা ও ফলমূল সংগ্রহ করার দক্ষতা ওই শিশুদের জীবিত থাকতে সাহায্য করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। এ শিশুদের খোঁজে জঙ্গলে অভিযান চালাতে কর্তৃপক্ষ কয়েকটি উদ্ধারকারী কুকুরসহ শতাধিক সেনা মোতায়েন করে। কিন্তু ৪০ মিটারের চেয়েও উঁচু দৈত্যাকার গাছ, বন্যপ্রাণী ও ভারী বৃষ্টির কারণে ‘অপারেশন হোপ’ নামের এ তল্লাশি ও অনুসন্ধান অভিযান কঠিন হয়ে উঠেছিল। এ বৃষ্টিবনে জাগুয়ার, সাপ ও অন্যান্য শিকার প্রাণীর বাস। কলম্বিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল জানায়, বনে গাছের ডালপালা দিয়ে তৈরি করা অস্থায়ী একটি আশ্রয় খুঁজে পান তারা। এখান থেকেই তারা ধারণা করেন, শিশুরা বেঁচে আছে। এর আগে নিখোঁজ শিশুদের ব্যবহার করা পানির বোতল ও তাদের খাওয়া ফলের ফেলে দেওয়া অংশ খুঁজে পেয়েছিলেন তারা। কলম্বিয়ার সেনা ও বিমান বাহিনীর বিমান ও হেলিকপ্টারও এ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছিল। মে’র মাঝামাঝিও চার শিশুকে জীবিত উদ্ধারের খবর দিয়ে টুইট করেছিলেন প্রেসিডেন্ট পেত্রো। কিন্তু পরে সেই টুইট মুছে দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, কলম্বিয়ার শিশুকল্যাণ সংস্থা তার দফতরকে খবরটি দিলেও সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এবার ওই চার শিশুকে উদ্ধার এবং সেনাবাহিনীর অভিযানের কিছু ছবিও প্রকাশ করেছে প্রেসিডেন্টের দফতর।

সর্বশেষ খবর