রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

পশ্চিমাদের সতর্ক করতেই পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন : পুতিন

পশ্চিমাদের সতর্ক করতেই পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন : পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, বেলারুশে স্বল্পপাল্লার ট্যাকটিকাল পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করা হয়েছে পশ্চিমাদের এটা স্মরণ করিয়ে দিতে যে, তারা রাশিয়াকে সামরিকভাবে পরাজিত করতে পারবে না। এর মাধ্যমে তিনি প্রথমবার বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

শুক্রবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে গুরুত্বপূর্ণ এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতায় সাবেক এ কেজিবি কর্মকর্তা বলেন, ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশকে এরই মধ্যে ট্যাকটিকাল পারমাণবিক ওয়ারহেড সরবরাহ করা হয়েছে, যদিও রাশিয়াকে এখনই পারমাণবিক অস্ত্রের শরণ নিতে হবে বলে মনে করেন না তিনি। ‘আপনারা জানেন, আমরা আমাদের মিত্র বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে ট্যাকটিকাল পারমাণবিক অস্ত্রের কিছু অংশ বেলারুশের ভূখন্ডে স্থানান্তরের বিষয়ে আলোচনা করছিলাম, এটা হয়ে গেছে। ‘পারমাণবিক ওয়ারহেডের প্রথম অংশটুকু বেলারুশের ভূখন্ডে চলে গেছে, তবে কেবল প্রথম অংশটুকুই গেছে। আমরা পুরো কাজ গ্রীষ্মের শেষ বা বছর শেষ হওয়ার আগেই সমাপ্ত করে ফেলব,’ বলেছেন তিনি। কাছাকাছি যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের লক্ষ্যে বানানো স্বল্পপাল্লার পারমাণবিক অস্ত্রকে ট্যাকটিকাল পারমাণবিক অস্ত্র বলে, দূরপাল্লার হলে স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্র। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর প্রথমবার রাশিয়ার বাইরে এই ট্যাকটিকাল ওয়ারহেড ইউক্রেনকে সমর্থন ও অস্ত্র দেওয়ার ব্যাপারে পশ্চিমাদের সতর্ক করতেই মোতায়েন করা হয়েছে, বলেছেন পুতিন। ‘এটা মূলত প্রতিরোধের উপাদান, যেন যারা আমাদের স্ট্র্যাটেজিক পরাজয়ের কথা ভাবছে, তা যে পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, যেন তারা তা বুঝতে পারে’। রুশ প্রেসিডেন্ট এখানে ‘স্ট্র্যাটেজিক পরাজয়’ বলে যে কূটনৈতিক শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন, তার অর্থ হচ্ছে- এমনভাবে রাশিয়াকে হারানো যেন পরাশক্তি হিসেবে মস্কোর প্রভাব বিশ্বমঞ্চ থেকে কয়েক দশকের জন্য গায়েব হয়ে যায়। পুতিনের মিত্র লুকাশেঙ্কো গত মঙ্গলবার বলেছিলেন, তারা রাশিয়ার কাছ থেকে যেসব ট্যাকটিকাল পারমাণবিক অস্ত্র পাওয়া শুরু করেছেন, সেগুলো যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৫ সালে জাপানে যেগুলো ফেলেছিল তার তিনগুণ বেশি শক্তিধর। এ বছরের মার্চে বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনে সম্মতির কথা জানিয়ে পুতিন কয়েক দশক ধরে ইউরোপে মিত্র দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের একই ধরনের অস্ত্র মোতায়েনের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। রুশ প্রেসিডেন্টের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে নিজেদের অবস্থান বদলানোর বিন্দুমাত্র ইচ্ছা তাদের নেই, তাছাড়া রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন কোনো লক্ষণও দেখছে না তারা। কেবল ওয়াশিংটন আর এর মিত্ররাই নয়, রাশিয়ার এ পদক্ষেপের দিকে চীনও কড়া নজর রাখছে। ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের বিরুদ্ধে বেইজিং বার বার সতর্কও করেছে। পুতিন বলছেন, পশ্চিমারা ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘স্ট্র্যাটেজিক পরাজয়’ চায়, কিন্তু অস্তিত্ব হুমকির মুখে না পড়লে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা নেই।

 

সর্বশেষ খবর