শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাদিস সংস্কারের ঘোষণা সৌদি যুবরাজের

হাদিস সংস্কারের ঘোষণা সৌদি যুবরাজের

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

এক বছর আগে মার্কিন ম্যাগাজিন দ্য আটলান্টিকের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যিনি এমবিএস নামে পরিচিত দাবি করেছিলেন যে, হাদিসের অপব্যবহার মুসলিম বিশ্বে চরমপন্থি এবং শান্তিপূর্ণ মানুষের মধ্যে বিভক্ত হওয়ার   মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে তিনি হাদিস সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর এ মুহূর্তে সমগ্র বিশ্বে এই সময়ে সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি খবর হলো, এই হাদিস সংস্কারের সিদ্ধান্ত। সহি হাদিসগুলো খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তিনি ‘কিং সালমান কমপ্লেক্স’ নামে একটি কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিকে দেখতে বলেছেন কোন হাদিসগুলো মোহাম্মদের (সা.) বাণীর সঙ্গে খাপ খায় না এবং হিংসা ও হত্যাকান্ডকে যথার্থ প্রমাণ করতে মোহাম্মদের (সা.) বাণীকে বিকৃত করেছে। যে সব হাদিস রক্তারক্তি ও হানাহানির কথা বলে,  মোহাম্মদের (সা.) বার্তাকে বিকৃত করে সেগুলো তিনি হাদিস থেকে বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন।

হাদিস মুসলমানদের দ্বিতীয় ধর্মগ্রন্থ। হাদিস গুরুত্ব ও মর্যাদার দিক থেকে প্রধান ধর্মগ্রন্থ কোরানের পরে অবস্থান। হাদিস হলো হজরত মোহাম্মদের (সা.) বাণী ও জীবনাচরণ। তাঁরা মনে করে যে, কোরআনের মতো হাদিসের প্রতিটি কথা নির্ভুল ও সত্য। তাদের কাছে হাদিসের অসম্ভব গুরুত্বের আরও একটি বড় কারণ রয়েছে। সেটা এ রকম, কোরআনে বহু অস্পষ্ট, অসংলগ্ন ও দ্ব্যর্থবোধক আয়াত আছে যার ব্যাখ্যা হাদিসে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তাছাড়া রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা ও প্রশ্নের উত্তর কোরআনে পাওয়া যায় না, হাদিসে পাওয়া যায়। সে কারণেই বলা হয় যে, ইসলাম দাঁড়িয়ে আছে মূলত দুটি প্রধান স্তম্ভের ওপর যার একটি কোরআন, আর অন্যটি হাদিস। সৌদি আরবে যে সংবিধান চালু রয়েছে তারও প্রধান ভিত্তি হলো এই দুটি ধর্মগ্রন্থ- কোরআন ও হাদিস। এর অর্থ হলো, মুসলমানদের কাছে কোরআন যতখানি অপরিহার্য, হাদিসও ঠিক ততটাই অপরিহার্য। চরমপন্থি ও সন্ত্রাসীদের অপব্যবহার থেকে হাদিসকে রক্ষা করার জন্য হাদিসের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য নথিভুক্ত করার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চলছে সৌদি আরবজুড়ে। এর পেছনে রয়েছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। তাঁর দাবি বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার হাদিস আছে। কিন্তু সেগুলো বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও প্রমাণিত নয় এবং জঙ্গিরা যা করছে তা হাদিসকে ভুল পথে চালনা করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, আল-কায়েদার অনুসারী, আইএসআইএস অনুসারীরা, তারা তাদের মতাদর্শ প্রচারের জন্য এমন হাদিস ব্যবহার করছে যা খুবই দুর্বল, সত্য হাদিস হিসেবে প্রমাণিত নয়।

সর্বশেষ খবর