সোমবার, ১০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ

আলোচনায় ক্লাস্টার বোমা

আলোচনায় ক্লাস্টার বোমা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে এবার আলোচনার বিষয়বস্তু হিসেবে দাঁড়িয়েছে ক্লাস্টার বোমা। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র বিতর্কিত ওই অস্ত্রটি ইউক্রেনে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে। কিন্তু তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্লাস্টার বোমা পাঠানোর সিদ্ধান্তকে ‘খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন। প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং স্পেন বলেছে, তারা এ অস্ত্র ব্যবহারের বিরোধী।

১০০টিরও বেশি দেশ ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধ করেছে, কারণ তা বেসামরিক মানুষের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনে। ক্লাস্টার বোমা বলতে সাধারণত অনেক ছোট ছোট বোমাকে বোঝায়, যা লক্ষ্যবস্তুতে একসঙ্গে নিক্ষেপ করা হয়। এতে বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে নির্বিচারে হত্যা করা যায়। যুদ্ধে এই অস্ত্রের ব্যর্থতা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। কারণ একটি ক্লাস্টার বোমা থেকে অনেকটা গ্রেনেড আকৃতির যে ছোট ছোট বোমাগুলো বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, তার অনেক অবিস্ফোরিত অবস্থায় থেকে যায়। ছোট ছোট ওইসব বোমা বছরের পর বছর ধরে মাটিতে অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকে এবং যে কোনো সময় বিস্ফোরিত হয়ে বেসামরিক মানুষের প্রাণনাশের কারণ হতে পারে। এদিকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান সাংবাদিকদের বলেছেন, ইউক্রেনে পাঠানো আমেরিকান ক্লাস্টার বোমাগুলো ইতোমধ্যে সংঘাতে রাশিয়া যেগুলো ব্যবহার করছে তার চেয়ে অনেক কমবার ব্যর্থ হয়েছে।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘একটি সময়োপযোগী, বিস্তৃত এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয়’ সামরিক সহায়তা প্যাকেজের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বাইডেন শুক্রবার সিএনএনকে বলেছেন, তিনি এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে মিত্রদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

এ ক্লাস্টার বোমাগুলো মূলত ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তা প্যাকেজের অংশ ছিল।

এদিকে, এ সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ক্লাস্টার বিস্ফোরক সংঘাত শেষ হওয়ার অনেক পরেও বেসামরিক মানুষের জীবনের জন্য বড় ধরনের হুমকির কারণ হয়ে থাকে।

মার্কিন সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ‘ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র বিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী ১২৩টি দেশের মধ্যে যুক্তরাজ্য একটি, যারা যা এ জাতীয় অস্ত্র উৎপাদন বা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে এবং অস্ত্রটি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেছে।’ স্পেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রবলেস আরও এক ধাপ এগিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তার দেশের দৃঢ় অবস্থান ছিল এ ধরনের অস্ত্র এবং বোমা ইউক্রেনে পাঠানো যাবে না।

এদিকে, কানাডার সরকার বলেছে, তারা শিশুদের ওপর এই বোমার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন- বিশেষ করে যেসব বোমা কখনো কখনো বহু বছর ধরে অবিস্ফোরিত থাকে। কানাডা আরও বলেছে, তারা ক্লাস্টার বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে ছিল এবং দেশটি ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্রের কনভেনশনের শর্তগুলো পুরোপুরি মেনে চলে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতরও এর সমালোচনা করেছে। সেখানকার এক প্রতিনিধি বলেছেন, এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত এবং কোনো জায়গায় তা ব্যবহার করা উচিত না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর