বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাবেক রুশ প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘনিয়ে আসছে

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘনিয়ে আসছে

দিমিত্রি মেদভেদেভ

ইউক্রেনকে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক সহায়তা শুধু রাশিয়ার সঙ্গেই যুদ্ধের পরিধি বাড়াবে তা নয় বরং এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করবে। লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে মঙ্গলবার মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটের শীর্ষ সম্মেলন শুরুর পর এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি বর্তমানে রাশিয়ার প্রভাবশালী নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিন মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন তিনি। টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো যা করছে তা এক রকম উন্মাদনা। এ থেকে অন্য কিছু আসবে না। প্রকৃতপক্ষে তারা বিশ্বকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ   ঘনিয়ে আসছে।

তিনি বলেন, নির্বুদ্ধিতার জায়গা থেকে পশ্চিমারা এ সামরিক সহযোগিতা দিচ্ছে যা অনেক আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল। মেদভেদেভ বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে তা অর্জন করার আগ পর্যন্ত রাশিয়া এ অভিযান চালিয়ে যাবে।

রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমাদের জন্য এসবের অর্থ কী? সবকিছুই স্পষ্ট। বিশেষ সামরিক অভিযান একই লক্ষ্যে এগিয়ে চলবে।’ গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এ পদক্ষেপকে রাশিয়া ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলছে।

এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকেই ন্যাটো জোটে যোগ দিতে পশ্চিমাদের তাড়া দিয়ে যাচ্ছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ন্যাটো সামরিক জোটে যোগদানের জন্য ইউক্রেনকে কখন আমন্ত্রণ জানানো হবে সে বিষয়ে কোনোরকম দিন তারিখ নির্ধারণ না করাটা ‘অযৌক্তিক’ সময় নষ্ট বলে উল্লেখ করেছেন জেলেনস্কি।

তবে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো বলেছে, যখন মিত্র দেশগুলো সম্মত হবে এবং শর্ত পূরণ করা হবে তখনই  এ সামরিক জোটে যোগ দিতে পারবে ইউক্রেন। তবে সেটা কবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। ফলে ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়টি নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।

তবে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে    এখনই অন্তর্ভুক্ত করা না হলেও পশ্চিমা দেশগুলো কিয়েভকে সামরিক সহায়তা দিয়েই যাচ্ছে। সম্প্রতি ইউক্রেনকে যুদ্ধসহায়তা হিসেবে ক্লাস্টার বোমা দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এতে অস্বস্তিতে পড়েছে কানাডা, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো পশ্চিমা মিত্ররা।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বা গুচ্ছবোমা দেবে। তবে অন্য দেশের ভূখে  এ বোমা ব্যবহার করতে পারবে না কিয়েভ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা দেওয়া খুবই কঠিন একটি সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে তিনি মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু ইউক্রেনের কাছে এ সম্মেলন কেবল অস্ত্রশস্ত্র আর গোলাবারুদের ব্যাপার নয়। ইউক্রেন যে এ সামরিক জোটে যোগ দিতে চাচ্ছে, সেটির ব্যাপারে সম্মেলন থেকে কী ধরনের অঙ্গীকার পাওয়া যাবে, সেটাই তাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ন্যাটোর সামরিক চুক্তির একেবারে মূলে আছে আর্টিকেল ৫, যাতে বলা হয়েছে, যে কোনো সদস্য দেশের ওপর আক্রমণ সব দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ বলে গণ্য হবে। সম্মিলিত প্রতিরক্ষার এ নীতি ইউক্রেনকে সুরক্ষা দিতে পারে। কিন্তু ন্যাটোর প্রায় সব সদস্য দেশই একমত যে, একটি দেশ যখন আগে থেকেই যুদ্ধে জড়িয়ে গেছে, তখন তাকে নেটোর সদস্য করা কঠিন।

সর্বশেষ খবর