শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদ্রোহী প্রিগোজিন কি বেঁচে আছেন?

বিদ্রোহী প্রিগোজিন কি বেঁচে আছেন?

বিদ্রোহী ‘পুতিনের রাঁধুনি’ প্রিগোজিনকে ঘিরে রহস্য ক্রমেই দানা বাঁধছে। রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দিয়েছিলেন ভাড়াটে সেনা ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান। তবে, পুতিনের চাপের মুখে কয়েক ঘণ্টা পরেই রণে ভঙ্গ দেন তিনি কিন্তু তারপর থেকে তার সন্ধান আর মেলেনি। এর মাঝে অবশ্য রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল বিদ্রোহ ঘটনার চার দিন পর প্রিগোজিনকে প্রেসিডেন্ট পুতিন ডেকেছিলেন। ৩ ঘণ্টা তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। এরপর আর কোনো খোঁজ নেই প্রিগোজিনের। এ অবস্থায় আমেরিকা সেনার অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল রবার্ট আব্রামস ইঙ্গিত দিলেন, ‘আর কখনো প্রিগোজিনকে প্রকাশ্যে দেখা যাবে কি না, সে বিষয়ে আমার গুরুতর সন্দেহ রয়েছে।’ তিনি কি বেলারুশে, নাকি রাশিয়ায় ফিরেছেন, নাকি আদৌ রাশিয়া ছাড়েননি এমন নানা গুঞ্জন রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সাবেক জেনারেল রবার্ট আব্রামস আশঙ্কা প্রকাশ করলেন, সম্ভবত আর বেঁচেই নেই প্রিগোজিন। অথবা এমনও হতে পারে, তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। রাশিয়া যে দাবি করেছে, বিদ্রোহের পাঁচ দিন পরে ২৯ জুন পুতিনের সঙ্গে প্রায় ৩ ঘণ্টার সাক্ষাৎ হয় প্রিগোজিনের। কেবল তিনিই নন, তার দলের অন্য কমান্ডাররাও সেই বৈঠকে ছিলেন। বৈঠক সম্পর্কে আব্রামসের মত, ‘পুরোটাই সাজানো।’

উল্লেখ্য, বিশ্বে আলোড়ন তৈরি করে ২৪ জুন আচমকাই মস্কোর দিকে রওনা দেয় ওয়াগনার যোদ্ধারা। বাহিনীর প্রধান প্রিগোজিন হুঙ্কার দেন, ‘আমাদের পথে যে আসবে ধ্বংস হয়ে যাবে।’ কিন্তু সে সময় পুতিন দ্রুত নিজের অনুগত রুশ সেনাকে সামনে রেখে বিদ্রোহীদের নিরস্ত করেন। প্রিগোজিন সে সময় রাশিয়া থেকে বেলারুশে চলে গিয়েছিলেন বলে বিভিন্ন পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল। পুতিন ঘনিষ্ঠ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো দাবি করেছিলেন, তিনিই মস্কোর সঙ্গে ওয়াগনার বাহিনীর সমঝোতা করিয়েছেন। আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলো সে সময় দাবি করেছিলেন, সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী প্রিগোজিনকে বেলারুশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘তাৎপর্যপূর্ণভাবে’ লুকাশেঙ্কো দাবি করেন, তার দেশে প্রিগোজিন নেই। ক্রেমলিনের তরফেও জানানো হয়, ওয়াগনার প্রধান কোথায় তারা জানে না। প্রিগোজিন বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছিল। এ পরিস্থিতিতে জেনারেল রবার্টের বক্তব্যে ধোঁয়াশা আরও বেড়েছে। একই সময়ে, আমেরিকার সামরিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘ইনস্টিটিউট ফর জি স্টাডি অফ ওয়ার’ মঙ্গলবার দাবি করেছে, ক্রমশ ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠা প্রিগোজিনকে ফাঁদে ফেলতেই ওয়াগনার যোদ্ধাদের একাংশের সাহায্যে ‘বিদ্রোহের চিত্রনাট্য’ তৈরি করেছিলেন পুতিন! একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ হোটেল ব্যবসায়ী প্রিগোজিনের ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনার অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে  ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে লিবিয়া, সিরিয়া, মোজাম্বিক, সুদানের মতো দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে প্রায় ৪০ হাজার যোদ্ধার এ পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী।

ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোজিনের। রুশ সেনা পরিকল্পিতভাবে? ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

সর্বশেষ খবর