মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

শস্য রপ্তানি চুক্তি স্থগিত করেছে রাশিয়া

শস্য রপ্তানি চুক্তি স্থগিত করেছে রাশিয়া

জাতিসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে দেশটির শস্য রপ্তানির ঐতিহাসিক চুক্তিটি স্থগিত করেছে রাশিয়া। এ সিদ্ধান্ত জানানোর কয়েক ঘণ্টা আগে ক্রিমিয়া সেতুতে হামলা হয়। মূলত এ ঘটনার পরই গতকাল চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে আর মেয়াদ না বাড়ানোর বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে রাশিয়া।

রাশিয়া এবং ইউক্রেন হলো বিশ্বের দুই শীর্ষ কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী দেশ। গম, বার্লি, ভুট্টা, রেপসিড, রেপসিড তেল, সূর্যমুখী বীজ এবং সূর্যমুখী তেলের প্রধান রপ্তানিকারক তারা। এ ছাড়া সারের বাজারেও রাশিয়ার আধিপত্য আছে।

এদিকে ক্রিমিয়া সেতুতে হামলায় দুজন নিহত এবং তাদের শিশুকন্যা আহত হয়েছে। ইউক্রেন ওই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি (এনএকে) গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছে, ক্রিমিয়া সেতু ইউক্রেনের ড্রোন হামলার লক্ষ্যস্থলে পরিণত হয়েছে। ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখ সংযোগকারী সেতুটিতে স্থানীয় সময় সোমবার রাত ৩টার দিকে ওই হামলা হয়।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে জানিয়ে এনএকে থেকে আরও বলা হয়, ‘এ সন্ত্রাসী হামলায় ক্রিমিয়া সেতুর সড়ক অংশের ক্ষতি হয়েছে। দুজন পূর্ণবয়স্ক নিহত হয়েছেন এবং এক শিশু আহত হয়েছে।’ ২০১৪ সালের যুদ্ধে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে রাশিয়া। ক্রিমিয়া সেতুতে হামলার সঙ্গে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানি চুক্তি স্থগিত করার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।

পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, কৃষ্ণ সাগর চুক্তি মেয়াদ আজই শেষ হয়েছে’।

‘দুর্ভাগ্যবশত, এ কৃষ্ণ সাগর চুক্তিতে রাশিয়া সম্পর্কিত অংশ এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি, তাই এর বাস্তবায়ন বাতিল করা হয়েছে।’ মস্কো চুক্তির বিপক্ষে নিজের অবস্থানের বিষয়টি তুরস্ক, ইউক্রেন এবং জাতিসংঘকে অবহিত করেছে বলেও জানান রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর দেশটি থেকে শস্য রপ্তানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কারণ, রাশিয়া প্রথমেই কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের বন্দরগুলোর দখল নিয়ে নেয়। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শস্য রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেইন থেকে পণ্যের জোগান বন্ধ হয়ে গেলে তার সরাসরি প্রভাব পড়ে বিশ্ববাজারে। লাফিয়ে লাফিয়ে শস্যের দাম কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সারা বিশ্বে দেখা দেয় খাদ্য সংকট। অন্যদিকে, ইউক্রেনের গুদামগুলোতে টন টন শস্য পড়ে নষ্ট হতে থাকে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানির বিষয়ে তিন পক্ষের মধ্যে গত বছর একটি চুক্তি হয়।

সর্বশেষ খবর