শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইউক্রেনের বন্দরে ভয়াবহ রুশ হামলা

খাদ্য সংকটের মুখে বিশ্ব

ইউক্রেনের বন্দরে ভয়াবহ রুশ হামলা

ক্রিমিয়া সেতুতে হামলার পর ইউক্রেনজুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ বাড়িয়েছে রাশিয়া। গতকাল কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর একটি আবাসিক ভবনে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন -এএফপি

বিশ্বের অন্যতম খাদ্যভান্ডার রাশিয়া ও ইউক্রেন। দেড় বছর ধরে দুই দেশই যুদ্ধে লিপ্ত। ফলে বিশ্বজুড়ে   দেখা দিয়েছে খাদ্যশস্যের অভাব। একটি গবেষণায় বলা হয়, যুদ্ধের জেরে খাদ্য, জ্বালানি বা আর্থিক, কোনো না কোনো সংকটের মুখে পড়তে হয়েছে ১৬০ কোটি মানুষকে। এর মধ্যে কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনীয় বন্দরে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ধ্বংস হয়েছে ৬০ হাজার টন খাদ্যশস্য এবং গুদাম।

তবে এ যুদ্ধের মধ্যেই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছরের ২৪ জুলাই কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে শস্য রপ্তানিতে মঞ্জুরি দেয় রাশিয়া। কিন্তু সোমবার সেই ঐতিহাসিক চুক্তি থেকে সরে আসে মস্কো। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী ওডেসা এবং মাইকোলাইভে হামলা চালায় রুশ সেনাবাহিনী। এর পরও বুধবার পর্যন্ত রাতভর ওডেসা এবং করনোমোর্স্কে কৃষ্ণসাগর উপকূলের বন্দর ও শস্য টার্মিনালগুলোকে নিশানা করে ক্ষেপণান্ত্র হামলা চালায় পুতিন বাহিনী। ওডেসার সামরিক মুখপাত্র শেরহি ব্রাতচুক বলেছেন, ‘সত্যিই ভয়াবহ হামলা হয়েছে। ৬০,০০০ টন শস্য ধ্বংস হয়েছে, যেগুলো একটি বড় জাহাজে তুলে নিরাপদ করিডর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।’

ইউক্রেনের কৃষিমন্ত্রী মাইকোলা সোলসকি বলেছেন, রপ্তানি পরিকাঠামোর অনেকাংশই অচল হয়ে পড়েছে। এদিকে ইউক্রেনের বন্দরে রাশিয়ার এ হামলার তীব্র নিন্দা করেছে জার্মানি ও ফ্রান্স। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নালেনা বারবোক বলেন, ‘ওডেসায় বোমা ফেলে বিশ্বে শস্য জোগানে আগাত হানছেন পুতিন। তিনি গরিবদের পেটে লাথি মারছেন।’

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শস্য রপ্তানিকারী দেশ ইউক্রেন থেকে পণ্যের জোগান বন্ধ হয়ে গেলে তা সরাসরি প্রভাব পড়বে বিশ্ববাজারে। শস্যের দাম লাফিয়ে কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সারা বিশ্বে দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট। অন্যদিকে ইউক্রেনের গুদামগুলোতে টন টন শস্য পড়ে নষ্ট হবে। বৃহস্পতিবার রাশিয়া সাফ জানিয়েছে, কৃষ্ণসাগরের ইউক্রেনীয় বন্দরে আসা জাহাজগুলোকে অস্ত্রবাহী বলে গণ্য করা হবে এবং সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ পরিস্থিতি বজায় থাকলে ফের খাদ্য সংকটের মুখে পড়তে   পারে গোটা বিশ্ব বলে আশঙ্কা।

উল্লেখ্য, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর দেশটি থেকে শস্য    রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছিল। কারণ, রাশিয়া প্রথমেই কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের বন্দরগুলোর দখল নিয়ে নেয়।

সর্বশেষ খবর