শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় উত্তাল ভারত, মোদির কড়া বার্তা

মণিপুর

দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় উত্তাল ভারত, মোদির কড়া বার্তা

জাতিগত সহিংসতার মধ্যেই ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও নিয়ে আরও উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। কুকি উপজাতির দুই নারীকে নগ্ন অবস্থায় হাঁটতে বাধ্য করার ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সহিংসতার প্রবণতা আরও বেড়েছে। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে পুরো ভারতে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। এদিকে, ঘটনার দুই মাস পর হেরাদাস (৩২) নামের মূল অভিযুক্তকে আটক করেছে মণিপুর পুলিশ। গতকাল থৌবাল জেলা থেকে তাকে আটক করা হয়। পুলিশ বলছে, ভিডিওটির সূত্র ধরেই তার হদিস মিলেছে। ঘটনার সময় হেরাদাসকে সবুজ টি-শার্ট পরা অবস্থায় নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছিল। ওই ভিডিও অবিলম্বে প্রত্যাহারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে নির্দেশ দিয়েছে। এই ক্ষোভের মুখে এত দিন ধরে মণিপুর নিয়ে মৌন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল প্রথম মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, এই অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। একজন অপরাধীও পার পাবে না। তিনি আরও বলেন, মণিপুরে যা ঘটেছে, তাতে আমার হৃদয় ব্যথিত ও ক্রুদ্ধ। গতকালই শুরু হয়েছে ভারতীয় সংসদের বাদল অধিবেশন। প্রথম দিনেই মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসসহ বিরোধীরা মুলতবি প্রস্তাব জমা দেন। সরকারপক্ষও আলোচনায় রাজি।

এদিকে ভিডিওটিতে যে ভয়াবহ দৃশ্য দেখা গেছে, তা গত ৪ মে ধারণ করা। তাতে দেখা যাচ্ছে, দুই তরুণীকে বিবস্ত্র করে এক দল উত্তেজিত জনতা রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে    একটি মাঠে নিয়ে যাচ্ছে। সেই মাঠে ওই দুই নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।

 

 

এমনকি, ওই দুই নারীর পরিবারের দুই সদস্যকেও খুন করা হয়েছে। গত ৪ মে মণিপুরের ইম্ফল শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরের কাংপোকপি জেলায় ওই ঘটনা ঘটে।

বুধবার ভিডিওটি নজরে আসার পরপরই এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় ‘ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডার ফোরাম’। প্রতিবাদ জানায় জাতীয় মহিলা কমিশন ও জাতীয় তফসিলি উপজাতি কমিশন।

এদিকে, এ ঘটনায় বড় সতর্কবার্তা দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকার ও মণিপুর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ অবিলম্বে এ ঘটনায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আজ শুক্রবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন।

ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যদি সরকার কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। গণতন্ত্রে এ ধরনের ঘটনা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মেইতেই জনজাতি। তবে সম্প্রতি তারা তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি তোলে। তাদের এ দাবির বিরোধিতা করে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসী। এ নিয়ে গত ৩ মে থেকে জাতিগত সহিংসতা চলছে মণিপুরে। সহিংসতায় অন্তত ১৩০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর