বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় সংস্কারের পথে ইসরায়েল

বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় সংস্কারের পথে ইসরায়েল

ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে -এএফপি

ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে সে দেশে সংসদ সদস্যরা নতুন একটি বিতর্কিত আইন পাস করেছেন। এ আইনে ‘অযৌক্তিক’ মনে করে কোনো সরকারি পদক্ষেপকে বাতিল করার সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাটি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এ আইন সংস্কারকে ঘিরে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়। বিরোধী দলগুলো সতর্ক করেছে এসব পদক্ষেপ সে দেশের গণতন্ত্রকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরায়েলে এখন অতি দক্ষিণপন্থি এবং রক্ষণশীলদের সরকার চলছে। সম্প্রতি তারা স্থির করেছে, বিচার বিভাগের ক্ষমতা কমাতে হবে। সেটি পার্লামেন্টে তোলা হয়েছে এবং পাসও হয়েছে। কিন্তু নেতানিয়াহু সরকারের এই প্রস্তাবের লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন। সোমবার পার্লামেন্টে এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পরেও নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়েছে।

কী আছে প্রস্তাবে : নেতানিয়াহু ও তার অনুগামীদের বক্তব্য, ইসরায়েলের আদালত আইনের ফাঁক দেখিয়ে পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ দিতে পারে। জনপ্রতিনিধিদের সেখানেই আপত্তি। তাদের দাবি, পার্লামেন্টের প্রতিনিধি হওয়ার জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হয়। অর্থাৎ, তারা জনপ্রতিনিধি।

পার্লামেন্টে তারা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা জনগণের কণ্ঠস্বর। অনির্বাচিত বিচারপতিরা সেই সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দিতে পারেন না।

ইসরায়েলে কোনো সংবিধান নেই। সবটাই প্রথা ও নীতির ওপর চলে। সেই প্রথাতেই এবার বদল ঘটানোর কথা বলছে পার্লামেন্ট। সোমবারের প্রাথমিক ভোটাভুটিতে ১২০ এমপির ৬৪ জন এর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত যে বহাল হবে, তা নিয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই।

আপত্তির কারণ : আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, ইসরায়েলে সরকার চালায় দক্ষিণপন্থি এবং রক্ষণশীলরা। ফলে বহু প্রগতিশীল বিষয় তারা আটকাতে চাইবে। আগে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া যেত। এবার সেই রাস্তা বন্ধ হতে চলেছে। এলজিবিটিকিউয়ের মতো বিষয় এই সিদ্ধান্তের ফলে সমস্যার মুখে পড়বে বলে মনে করছেন তারা।

সেনাবাহিনীর বিক্ষোভ : ইসরায়েলে সমস্ত ব্যক্তিকে পড়াশোনা শেষ করার পর কিছুদিন বাধ্যতামূলকভাবে সেনায় কাজ করতে হয়। কিন্তু রক্ষণশীল চার্চের কিছু ব্যক্তি এই নিয়ম থেকে অব্যাহতি পান। আদালত এর বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু নতুন আইনে ওই ব্যক্তিরা ছাড় পাবেন। এর প্রতিবাদে বিমানবাহিনীর একটি অংশ চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

প্রায় ১ হাজার সেনার ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, নতুন নিয়ম বহাল হলে তারা কাজ থেকে ইস্তফা দেবেন। সেনাবাহিনীর অন্য অংশগুলোর মধ্যেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ফলে সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হচ্ছে। নেতানিয়াহু বিষয়টিকে কীভাবে সামলান, সেটাই এখন দেখার। ডয়চে ভেলে

সর্বশেষ খবর