বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইউক্রেন বাহিনীর সামর্থ্য নিয়ে সন্দেহ

রণাঙ্গনের পরিস্থিতি সম্পর্কে ‘আশঙ্কাজনক’ বিশ্লেষণ করছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা

দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে যুদ্ধ। তবুও ইউক্রেনকে বাগে আনতে পারছে না রাশিয়া। উল্টো যুদ্ধের মোড় ঘুরছে বলেই দাবি করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ। এ যখন পশ্চিমা গণমাধ্যমের খবর। ঠিক তখনই রণাঙ্গনের পরিস্থিতি সম্পর্কে ‘আশঙ্কাজনক’ বিশ্লেষণ করছেন খোদ পশ্চিমা কর্মকর্তারা। এমনকি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভূমি উদ্ধারে ইউক্রেন বাহিনীর সামর্থ্য নিয়েও তারা সন্দিহান। যুদ্ধ সম্পর্কে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে এমন কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের চার সিনিয়র কর্মকর্তা।

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় রাজ্যের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান মাইক কুইগলে সম্প্রতি ইউরোপ সফর সম্পন্ন করেন। সফরকালে তিনি ইউক্রেন বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজে যুক্ত মার্কিন সেনা কমান্ডারদের সঙ্গে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন। সফরকালের সেই অভিজ্ঞতার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘যা জানতে পেরেছি তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তাদের সামনে থাকা (মারাত্মক) প্রতিকূলতা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটাই এ যুদ্ধের সবচেয়ে কঠিন সময়।’ রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণ অংশে তাদের দখলকৃত এলাকায় বহুস্তর বিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে। লাখ লাখ স্থলমাইনের সঙ্গে যেখানে রয়েছে সারি সারি পরিখার জাল। এ প্রতিরোধ ভেঙে এগোতে গিয়ে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে ইউক্রেনীয় সেনারা। ফলে বাধ্য হয়েই সেনাদের পিছু হঠার নির্দেশ দিয়ে পুনরায় সংগঠিত করতে হয়েছে কমান্ডারদের। এ বাধা পেরোনোই বর্তমানে ইউক্রেন বাহিনীর সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ।

জ্যেষ্ঠ আরেক পশ্চিমা কূটনীতিক সিএনএনকে বলেন, ‘রুশদের বেশকিছু প্রতিরক্ষা সারি রয়েছে, অথচ ইউক্রেনীয়রা প্রথম সারিই ভেদ করতে পারেনি। গত সাত, আট সপ্তাহ লড়াই করেও তারা যে প্রতিরোধ ভাঙতে পারেনি, সেটা আরও কয়েক সপ্তাহ যুদ্ধ চালিয়ে গেলেও হঠাৎ করেই পারবে- সেই সম্ভাবনা কোথায়? বিশেষ করে, এই সময়ে তাদের জনবল তো আরও কমবেই। কারণ, পরিস্থিতি খুবই কঠিন।’

সিনিয়র আরেক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী যে প্রতিকূলতার মধ্যে আছে, যুক্তরাষ্ট্র সেটা স্বীকার করে। তবে আমরা নতুন অগ্রগতি হওয়ার আশাও রাখি। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, এমন অবস্থায় এগোনো কষ্টসাধ্য- অভিযানের গতিও প্রত্যাশার চেয়ে বেশ কম। তবে আমি মনে করি, এখনো তাদের উন্নতি করার মতো সময় ও সুযোগ আছে।’ তবে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা কিন্তু সফলতার দাবি করেছেন। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফসের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলেকে বলেছেন, পর্যায়ক্রমে সামনে এগোনোর মতো পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা এখনো দৃঢ় রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এই জেনারেলকে জানান তিনি। জালুঝনি বলেন, ‘আমাদের সেনা তাদের সেরাটা দিচ্ছে। শত্রু একাধিক দিক দিয়ে আক্রমণ করেও সফল হতে পারছে না।’

তবে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসপেন সিকিউরিটি ফোরামে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি। এ সময় তিনি বলেছিলেন, পশ্চিমা বিশ্ব থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সহায়তা আসতে দেরি হওয়ায় ইউক্রেনীয় বাহিনীর অগ্রগতি মন্থর হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বসন্তে পাল্টা আক্রমণ শুরুর পরিকল্পনা করেছিলাম, কিন্তু তা করতে পারিনি। স্পষ্টভাবে বললে, আমাদের কাছে যথেষ্ট গোলাবারুদ, অস্ত্র ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্রিগেড ছিল না।’

সর্বশেষ খবর