শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
জম্মু-কাশ্মীর সমস্যা

রাজ্যের মর্যাদা এখনই ফেরানো সম্ভব নয়, আদালতে জানাল কেন্দ্র

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। দেশটির শীর্ষ আদালতকে এ কথা জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এটাও জানিয়েছে রাজ্যটিতে যে কোনো দিন নির্বাচন হতে পারে। কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তরিত করার বিষয়টি একটি অস্থায়ী প্রক্রিয়া।

জম্মু-কাশ্মীরকে কবে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে- গতকাল এই সম্পর্কিত একটি মামলার শুনানি চলছিল দেশটির সুপ্রিম কোর্টে। মামলাটির শুনানি হচ্ছে দেশটির প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে। কেন্দ্র এবং জম্মু-কাশ্মীর সরকারের হয়ে এই মামলায় সওয়াল করছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট সংসদে ঘোষণা দিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশেষ মর্যাদা হারায় জম্মু-কাশ্মীর। এই ধারার অধীন ৩৫এ ধারায় ভারতীয় ভূখণ্ডে থেকেও জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দারা যে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন তা খারিজ হয়ে যায়। পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে ভেঙে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দুটি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল তৈরি করা হয়। এই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। গত মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের কাছে নির্দিষ্ট করে জানতে চেয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো সময়সীমা বা গতিপথ তৈরি করা হয়েছে কি না। এ ব্যাপারে সলিসিটর জেনারেল আদালতে জানিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর আগামী ৩১ আগস্ট (গতকাল) কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নিয়ে ইতিবাচক বিবৃতি দিতে সক্ষম হবেন।

গতকাল শুনানির শুরুতে সলিসিটার জেনারেল জানিয়ে দেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলে রূপান্তরিত করা একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা। একে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আরও কিছু কাজের প্রয়োজন। তাই কত দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে তার নির্দিষ্ট সময়সীমা বলা সম্ভব নয়। তবে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে জম্মু-কাশ্মীরে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে।’

উপত্যকায় নির্বাচন করার ব্যাপারে সলিসিটর জেনারেল আদালতে জানান, ‘জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচন করাতে প্রস্তুত কেন্দ্র। যে কোনো সময় নির্বাচন হতে পারে।

বর্তমানে ভোটার তালিকা সংশোধন করা হচ্ছে। শিগগিরই এই কাজ শেষ হবে। এরপরে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।’

উপত্যকার নির্বাচন কেমন হবে, সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সলিসিটর জেনারেল আরও জানান ‘সেখানে তিন ধরনের নির্বাচন এখনো বাকি রয়েছে। প্রথমে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। দ্বিতীয় ধাপে পৌরসভার নির্বাচন হবে। তৃতীয় ধাপে বিধানসভার নির্বাচন হবে।’

শীর্ষ আদালতে কেন্দ্র আরও জানায় যে, এই অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে যেসব যুবক বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির দ্বারা পথভ্রষ্ট হয়েছিল তারা লাভবান হয়েছে।

সর্বশেষ খবর