জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রচ- প্রভাব পড়েছে প্রকৃতিতে। সৃষ্টি হচ্ছে বন্যা, খরা, ঝড় ও দাবানল। এর প্রভাবে বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরে ৪ কোটি ৩১ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি মনোযোগ না দেওয়ার অভিযোগও তুলেছে সংস্থাটি।
সংস্থাটি বলছে, চার ধরনের ক্রমবর্ধমান জলবায়ু বিপর্যয় (বন্যা, ঝড়, খরা ও দাবানল) ৪৪টি দেশে এসব শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ বাস্তুচ্যুতির ৯৫ শতাংশ বন্যা ও ঝড়ের কারণে হয়েছে। এ গবেষণা কাজে যুক্ত ছিলেন লরা হিলি। তিনি এএফপিকে বলেন, এ ধরনের ঘটনার সামান্য চিত্রই উঠে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে। তিনি আরও বলেন, এটি প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার শিশু বাস্তুচ্যুত হওয়ার সমান। ইউনিসেফের এবারের প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া শিশুদের বিভিন্ন করুণ কাহিনিও তুলে ধরা হয়েছে। এসব শিশুর একজন হলো সুদানের খালিদ আবদুল আজিম। খালিদ বলেছে, ‘আমরা কয়েক সপ্তাহ ধরে সড়কে বসবাস করছি। সেখানেই আমাদের সব জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে।’ ভয়াবহ বন্যার পর তার গ্রামে বর্তমানে শুধু নৌকায় যাওয়া-আসা করা যায় বলেও জানায় খালিদ। সাধারণত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের পরিসংখ্যাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্তদের বয়স প্রকাশ করা হয় না। আলাদা করে শিশুদের সংখ্যা গণনা করতে ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টারের সঙ্গে কাজ করেছে ইউনিসেফ। চীন, ভারত ও ফিলিপাইনের মতো দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত (ছয় বছরে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ) হয়েছে। বিপুল জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এসব দেশের মানুষ বেশি বাস্তুচ্যুত হয়। হিলি বলছেন, শিশুসহ যাদের ইতোমধ্যে নিজেদের বাসস্থান থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছে তাদের অবশ্যই ‘জলবায়ু পরিবর্তনের এই বিশ্বে’ বসবাস করার জন্য তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিশু তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয় এবং শিশুরা পাচারকারীর শিকার হওয়ার মতো অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তা এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।