বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক বাতিল মিসর জর্ডান ফিলিস্তিনের

এমন বিব্রতকর অবস্থায় এর আগে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পড়েননি বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে। একযোগে বাইডেনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেছে আরব বিশ্বের নেতারা। ইসরায়েল সফর শেষে গতকাল জর্ডানের রাজধানী আম্মানে যাওয়ার কথা ছিল প্রেসিডেন্ট বাইডেনের। সেখানে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের। বাইডেন বিশ্বাস করেন, বিভিন্ন পক্ষকে এক জায়গায় এনে আলোচনা করতে পারলে সংকট নিরসন হবে। কিন্তু তার এই বিশ্বাস এখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।মূলত গাজার একটি হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে বিস্ফোরণের ফলে শত শত মানুষের মৃত্যুর পর বাইডেনের সঙ্গে গতকালের ওই বৈঠক বাতিল করেন আরব নেতারা। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি অবশ্য বলেছেন, জর্ডান সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত ‘উভয়পক্ষের সম্মতির’ ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে। এদিকে, গাজার আল আহলি হাসপাতালে বিমান হামলায় নিহতদের উদ্দেশে তিন দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

এটা গণহত্যা -চিকিৎসক : ব্রিটিশ-ফিলিস্তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাহের কুহাইল বিবিসিকে বলেন, তিনি যা দেখেছেন তা ‘কল্পনারও বাইরে’। তার কথায়, ‘আমি একটি এফ-১৬ বা এফ-৩৫ (যুদ্ধবিমান) থেকে দুটি রকেট আসতে দেখেছি। ওই দুটো বিমান থেকে মানুষের ওপরে গোলাবর্ষণ করেছে, তাদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে।’ বিস্ফোরণের ফলে আগুন লেগে অনেক লোক মারা গেছে। প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব ছিল। গাজায় হাসপাতালে বিস্ফোরেণের পর আল আহলি-আরব হাসপাতালের আরেক চিকিৎসক একে ‘গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন। মেডেসিনস সানস ফ্রন্টিয়ার্সের প্লাস্টিক সার্জন ঘাসান আবু-সিত্তাহ বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে অপারেশন করছিলাম, হঠাৎই একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ হয় আর অপারেশন রুমের ছাদটাই পুরো ভেঙে পড়ে। এটা একটি গণহত্যা।’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, সেটি খ্রিস্টান মিশনারিদের পরিচালিত একটি হাসপাতাল, যার সঙ্গে হামাসের কোনো সম্পর্ক নেই। ওই হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গত সপ্তাহের শেষদিক থেকে প্রায় ৬ হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৫০০ জন নিহত হয়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও শতাধিক মানুষ আটকা পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ : গাজার হাসপাতালে বোমা হামলার পর বেশ কয়েকটি বড় শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিবিসি সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন পশ্চিম তীরের বেশ কয়েকটি শহরে রাতেই ফিলিস্তিনিরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। বিভিন্ন জায়গায় তারা পাথর        ছুড়তে থাকেন নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে। সেখানে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের বিরুদ্ধে স্লোগান      দেওয়া হয়।

একপর্যায়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের সামনে হাসপাতালে বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়। এছাড়া ফরাসি দূতাবাসের বাইরে আরেকটি দল জড়ো হয় এবং ভবনটি লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে বলে জানা গেছে। এর বাইরে ত্রিপোলি এবং লিবিয়ার অন্যান্য শহরেও শত শত মানুষ ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করে এবং গাজাবাসীর সমর্থনে স্লোগান দেয়।

সর্বশেষ খবর