বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
জিম্মিদশা থেকে মুক্তি

হামাস কেমন আচরণ করেছে জানালেন ৮৫ বছরের লিফশিৎজ

হামাস কেমন আচরণ করেছে জানালেন ৮৫ বছরের লিফশিৎজ

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে জিম্মি হয়েছিলেন ৮৫ বছর বয়সী ইসরায়েলি নারী ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ। সোমবার রাতে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তির পর লিফশিৎজ জানিয়েছেন, জিম্মি থাকা অবস্থায় কোন পরিস্থিতিতে ছিলেন তিনি। আর হামাস সদস্যরা তাঁর সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন। হামাস হেফাজত থেকে মুক্তি পাওয়া দুই ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে একজন ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ। অপহরণের পর তাকে গাজার একটি সুড়ঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় বলে বর্ণনা করেন ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ। তিনি বলেন, ‘আমি নরকের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম।’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইসরায়েল সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে গাজা সীমান্তে বেড়া দিয়েছে। তবে তা হামাস যোদ্ধাদের ইসরায়েলে প্রবেশ ঠেকাতে পারেনি। সংবাদ সম্মেলনে লিফশিৎজের মেয়ে শ্যারন দোভাষীর কাজ করছিলেন। গতকাল ইসরায়েলের তেল আবিবে একটি হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করেন লিফশিৎজ। তিনি বলেন, ইসরায়েলের কিবুৎজ এলাকা থেকে তাঁকে আটক করেন হামাস সদস্যরা। পরে তাঁকে মোটরসাইকেলে করে গাজায় নেওয়া হয়। এ সময় তাঁর শরীরে বেশ কয়েক জায়গায় আঘাত লাগে। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল তাঁর। সোমবার লিফশিৎজ ছাড়াও নুরিত কুপার (৭৯) নামের আরও এক ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর আগে আরও দুই মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দেয় গোষ্ঠীটি।

লিফশিৎজ বলেন, যখন তাঁকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন তাঁর ঘড়ি ও গয়নাগুলো নিয়ে নেন হামাস সদস্যরা। গাজায় মোটরসাইকেল থেকে নামার পর তাঁকে নিতে আসা লোকজন বলেছিলেন, ‘আমরা পবিত্র কোরআনে বিশ্বাস করি। আমরা আপনাকে আঘাত করব না।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সুড়ঙ্গের ভিতরে লিফশিৎজকে যেখানে রাখা হয়েছিল, স্থানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ছিল। তাঁদের ম্যাট্রেস পেতে ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রতি দুই-তিন দিনে একজন চিকিৎসক এসে সবাইকে দেখে যেতেন। প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হতো। একজন জিম্মিকে গাজায় নিয়ে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। তাঁকেও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।

লিফশিৎজ জানান, প্রতি পাঁচজন জিম্মির জন্য একজন নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা রেখেছে হামাস। জিম্মিদের ‘খুঁটিনাটি বিষয়ে’ খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন নারীদেরও সেখানে দায়িত্বে রেখেছে হামাস।

জিম্মি থাকার সময় তাঁদের পনির (চিজ) ও শসা খেতে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান লিফশিৎজ। তিনি বলেন, একই খাবার হামাস সদস্যরাও খেয়েছেন। এ সময় শ্যারন বলেন, তাঁর মা মনে করেন ‘সব জিম্মি মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এই গল্পটা শেষ হবে না।’

সর্বশেষ খবর